মার্কোস রড্রিগেজ প্যান্টোজাকে বলা হয় স্প্যানিশ মোগলি। শৈশব ও কৈশোরের ১২টি বছর তিনি একটি নেকড়ে দলের সঙ্গে ছিলেন। পরে ১৯ বছর বয়সে কর্তৃপক্ষ তাঁকে মানুষের সমাজে নিয়ে আসে।
বর্তমানে প্যান্টোজার বয়স ৭২ বছর। জীবনের এই পর্যায়ে এসেও বুনো অতীতের কথা ভুলতে পারছেন না তিনি। জানিয়েছেন, মানুষের জীবন নিয়ে তিনি হতাশ।
বুধবার ব্রিটিশ গণমাধ্যম ডেইলি স্টার জানিয়েছে, আবারও বুনো পাহাড়ি নেকড়েদের মাঝে ফিরে যেতে ইচ্ছা হয় কি না, প্যান্টোজার কাছে একবার জানতে চেয়েছিল বিবিসি। উত্তরে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি এটা বহুবারই ভেবেছি। কিন্তু আমি এখন এই জীবনে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। এই জীবনের অনেক কিছুই সেখানে নেই, বিশেষ করে সংগীত কিংবা নারী। এই সমাজে থেকে যাওয়ার জন্য নারী একটি বড় কারণ।’
নেকড়েদের সমাজে বড় হওয়ার বিষয়ে প্যান্টোজা জানান, শৈশবে মায়ের মৃত্যুর পর তাঁর বাবা আরেকটি সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। এ অবস্থায় প্যান্টোজাকে পাহাড়ি একটি এলাকায় এক মেষপালকের কাছে রেখে আসেন বাবা। একসময় ওই মেষপালকও মারা যান। সে সময় প্যান্টোজার বয়স ছিল মাত্র সাত বছর।
তিনি বলেন, ‘একদিন আমি একটি গুহায় প্রবেশ করি এবং সেখানে থাকা কয়েকটি নেকড়ে শাবকের সঙ্গে খেলতে শুরু করি। খেলতে খেলতেই একসময় ওই গুহার ভেতরেই ঘুমিয়ে পড়ি। পরে নেকড়ে মা তাঁর বাচ্চাদের জন্য খাবার নিয়ে এলে আমার ঘুম ভাঙে।’
প্যান্টোজা জানান, ঘুম ভাঙার পর ওই নেকড়ে মা তাঁর দিকে কিছুটা খাবার ঠেলে দেয় এবং তাঁর শরীর চাটতে শুরু করে।
তিনি বলেন, ‘এরপর থেকেই আমি ওই পরিবারের সদস্য হয়ে যাই।’
বন থেকে ফিরিয়ে আনার পর মানুষের জীবনে অভ্যস্ত হতে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল প্যান্টোজার। কারণ ফুটবল, রাজনীতি কিংবা স্প্যানিশ সংস্কৃতি সম্পর্কে কোনো কিছুই জানতেন না তিনি। বলেন, ‘আমি শব্দ বেশি সহ্য করতে পারতাম না। রাস্তায় পিঁপড়ের মতো অসংখ্য মানুষ আর গাড়ি আসছে, যাচ্ছে। রাস্তা পার হতেই ভয় পেতাম।’
প্যান্টোজা দাবি করেন, বহু বছর একসঙ্গে থাকার কারণে তিনি এখনো নেকড়েদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। এমনকি অন্যান্য প্রাণীর আওয়াজও সঠিকভাবে নকল করতে পারেন।