অনলাইন ডেস্ক
কেমন অবাক শোনালেও অ্যান্টার্কটিকায় একটি ডাকঘর আছে। পেঙ্গুইন পোস্ট অফিস নামে পরিচিত এ ডাকঘরে চাকরির জন্য আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে। আগামীকাল, অর্থাৎ ১৮ মার্চ আবেদনের শেষ দিন। যদিও এতে আমাদের খুশি হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ, এবারের তিনটি পদের জন্য শুধু যুক্তরাজ্যের নাগরিকেরাই আবেদন করতে পারছেন।
পোর্ট লকরয়ের বিখ্যাত এই ডাকঘর হলো দুনিয়ার সবচেয়ে দক্ষিণের জাদুঘর। এখানে পেঙ্গুইনের দেখা পাওয়া কিংবা এদের মলের গন্ধ পাওয়ার মতো বিষয়গুলোই সবচেয়ে সাধারণ।
প্রতি বছর অ্যান্টার্কটিক হেরিটেজ ট্রাস্টে এই চাকরির জন্য আবেদনের বন্যা বয়ে যায়। এ বছর তিন পদে নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। আর এদের সবাইকে হতে হবে ব্রিটিশ নাগরিক।
এসব তথ্য জানা যায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজের এক প্রতিবেদনে।
মোটামুটি আশি হাজারের মতো চিঠি ও পোস্টকার্ড প্রস্তুত করার পাশাপাশি একটি দোকান পরিচালনা করতে হয়, সেই সঙ্গে এখানে যাত্রাবিরতি করা প্রমোদতরির ১৮ হাজার যাত্রীকেও স্বাগত জানাতে হয়।
এবারের আবেদনকারীদের একজন ক্যাটি শ তাঁর আগ্রহের জানান দিয়েছেন অদ্ভুতভাবে। এক পায়ে অ্যান্টার্কটিকার নিখুঁত একটি মানচিত্রের উল্কি করেছেন, অপর পায়ে করেছেন বিখ্যাত অভিযাত্রী আর্নেস্ট শেকেলটনের প্রতিকৃতির উল্কি।
‘অ্যান্টার্কটিকায় কাজ করা একজন সামুদ্র জীববিজ্ঞানী হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে বেড়ে উঠেছি আমি।’ বলেন ক্যাটি শ।
ডাকঘরটিতে ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন যে চারজন, তাঁদের সবাই নারী। ক্লেয়ার ব্যালেন্টাইন, লুসি ব্রাজোন, নাতালি করবেট ও মাইরি হিলটন নামের এই চার নারী দায়িত্ব পান এটি পরিচালনার। মজার ঘটনা, দুর্গম এই ডাকঘরে দায়িত্ব পালনের জন্য সেবার প্রায় ৬ হাজার মানুষ আবেদন করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে নির্বাচিত করা হয় চারজনকে।
আবেদনপত্রটিতে আগ্রহীদের পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে সতর্ক করে বলা হয়েছে,
‘দ্বীপে প্রবাহিত জলের কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই ধোয়ার সুবিধা খুবই সীমিত। এখানে আসা বিভিন্ন জাহাজ থেকে ক্যানে জল সংগ্রহ করা হয়।’
‘পোর্ট লকরয়ে গোসলের সুবিধা নেই। তাই কর্মীরা এই সীমিত ধোয়া কিংবা গোসলের সুবিধার মধ্যে আরামদায়কভাবে জীবন-যাপন করতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে, তবু পরিচ্ছন্নতার বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।’
‘পরিদর্শন করা জাহাজগুলো প্রতি সপ্তাহে একবার গোসলের ব্যবস্থা করবে, তবে আবহাওয়ার অবস্থা খারাপ হলে দর্শক বা গোসল ছাড়াই দুই সপ্তাহ পর্যন্ত কাটিয়ে দেওয়া লাগতে পারে আপনাকে।’
অ্যান্টার্কটিকার ক্রমবর্ধমান পর্যটন শিল্প এখানকার সূক্ষ্ম ও স্পর্শকাতর বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি করছে এমন উদ্বেগও রয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) অনুসারে, অ্যান্টার্কটিকার পর্যটকেরা এমনকি পেঙ্গুইনদের প্রজনন এবং সামাজিক আচরণ পরিবর্তন করতে বাধ্য করছে।
এবারের আবেদন করার শেষ দিন কিন্তু আগামীকাল অর্থাৎ ১৮ মার্চ। নির্বাচিত তিনজন এ বছরের নভেম্বর থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত পাঁচ মাস দায়িত্ব পালন করবেন।