Ajker Patrika
হোম > ল–র–ব–য–হ

যে দেশে বিমানবন্দরের রানওয়ের ভেতর দিয়ে ট্রেন চলে

ইশতিয়াক হাসান

যে দেশে বিমানবন্দরের রানওয়ের ভেতর দিয়ে ট্রেন চলে

উড়োজাহাজ সারা বিশ্বের যোগাযোগব্যবস্থাকে অনেক সহজ করে দিয়েছে, তাতে সন্দেহ নেই। এদিকে পৃথিবীর বিপুল মানুষের যাতায়াতের বাহন হিসেবে ট্রেনের আলাদা পরিচিতি আছে। ট্রেনভ্রমণ অনেকের কাছেই প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি উপভোগ্য এক যাত্রা। কোনো একটি বিমানবন্দরের রানওয়ে কেটে রেললাইন চলে গেছে, এটি নিশ্চয় আশা করবেন না আপনি । ওই রেলপথে আবার ট্রেনও চলে! আপনি কেন, এ কথা শুনে অভিজ্ঞ কোনো কোনো পাইলটের চোখ কপালে ওঠাটাও অস্বাভাবিক নয়। 

গালগপ্পো বা কল্পনা নয়, এমন বিমানবন্দর সত্যিই আছে। গিসবোর্ন এয়ারপোর্ট নামের ওই বিমানবন্দরটির অবস্থান নিউজিল্যান্ডে। অভ্যন্তরীণ এই বিমানবন্দরটি মূল রানওয়েকে ছেদ করে গেছে পালমারস্টোন নর্থ-গিসবোর্ন রেললাইন। 

এটিই বিশ্বের একমাত্র ট্রেন, যা সম্পূর্ণরূপে চালু একটি বিমানবন্দরের রানওয়ে অতিক্রম করে যায়। ট্রেনটি ওয়াইপাওয়োয়া নামের একটি বড় রেল সেতুও অতিক্রম করে। এর বাষ্পীয় ইঞ্জিনটি ১৮৯৭ সালে নিউজিল্যান্ডেই নির্মিত হয়েছিল। ১৯৮৫ সালে একটি খেলার মাঠ থেকে উদ্ধার করা হয় এটি। গিসবোর্ন সিটি ভিন্টেজ রেলওয়ে সোসাইটি (জিসিভিআর) ইঞ্জিনটির সংস্কার করে চালুর উপযোগী করে তুলে। ১৯৬৭ সালে তৈরি একটি ডিজেল লোকোমোটিভও টেনে নিয়ে যায় বগিগুলোকে। 

ট্রেনে ভ্রমণের সময় আশপাশের অসাধারণ দৃশ্যও মুগ্ধ করে পর্যটকদের১৯৩৬ সালের একটি যাত্রীবাহী বগি এবং বিশেষভাবে রূপান্তরিত তিনটি বগি এই বাষ্পীয় ইঞ্জিনের সঙ্গে জুড়ে দিয়ে তৈরি হয় রেলগাড়িটি। ২০০৬ সালের অক্টোবর থেকে অবশ্য কেবল গিসবোর্ন থেকে ৪৫ মিনিট দূরের একটি পর্যটন গন্তব্য মুরিওয়াইতে ভ্রমণ করছে ট্রেনটি। বুঝতেই পারছেন এই ট্রেনে এখন পর্যটকেরাই ভ্রমণ করেন। এই ট্রেন যাত্রার সময় আশপাশের অসাধারণ দৃশ্যও মুগ্ধ করে তাঁদের। জিসিভিআরই রেলপথটি পরিচালনা করে। 

মজার ঘটনা, এখন এটিই এমন একমাত্র বিমানবন্দর হলেও একটা সময় একই কৃতিত্বের আরেক দাবিদার ছিল। তাসমানিয়ার উত্তর-পশ্চিম উপকূলের উইনিয়ার্ড এয়ারপোর্টেরও রানওয়ে কেটে যেত ট্রেন। তবে ওই রেলপথে যাত্রীর সংখ্যা কমতে থাকায় ২০০৫ সালের গোড়ার দিকে বিমানবন্দরের ভেতর দিয়ে রেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। 

বগিগুলোকে টেনে নেওয়া বাষ্পীয় ইঞ্জিনটি ১৮৯৭ সালে নির্মিত হয়েছিলগিসবর্নের শহরতলি এলগিনে অবস্থিত বিমানবন্দরটির রানওয়ে ধরে ট্রেন চলার বিষয়টি যতই আকর্ষণীয় মনে হোক, বিষয়টি কিন্তু বেশ জটিল। স্বাভাবিক, এখানে অবতরণ করতে থাকা কোনো উড়োজাহাজের বেশ কাছ দিয়ে চলে যায় ট্রেনটি। ট্রেনের সময়সূচি মাথায় রেখেই এখানে বিমান ওঠানামার সময়সূচি ঠিক করা হয়। বেশির ভাগ সময় ট্রেন কিংবা উড়োজাহাজের একটিকে থামিয়ে রাখা হয় অপর একটি যান নিরাপদে যাওয়ার আগ পর্যন্ত। 

নিঃসন্দেহ এটি একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ এবং খুব সতর্কতার সঙ্গে এখানে উড়োজাহাজ ও ট্রেন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তবে দুই ধরনের যানবাহনের সংঘর্ষের চিন্তাটাও এমনকি দুঃসাহসী মানুষের বুকও কাঁপিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। যদিও সৌভাগ্যক্রমে এখন পর্যন্ত এ ধরনের কিছু ঘটেনি। 

৪ হাজার ২৯৭ ফুট লম্বা প্রধান রানওয়ের পাশাপাশি বিমানবন্দরটিতে তিনটি ঘাসের রানওয়েও আছে। সেগুলো অবশ্য তুলনামূলক হালকা উড়োজাহাজের জন্য। 

কাজেই পাঠক আপনি যদি দুঃসাহসী কিংবা বৈচিত্র্যপিয়াসী হোন, নিউজিল্যান্ড ভ্রমণে গেলে গিসবোর্ন বিমানবন্দরে আপনার পদধূলি পড়বে আশা করি। আর আমার মনে হয়, সে ক্ষেত্রে এখানকার কোনো উড়োজাহাজে ভ্রমণের চেয়ে ট্রেনযাত্রাটা বেশি মজাদার এবং রোমাঞ্চকর হবে। রানওয়ে কেটে চলে যাওয়া এমন ট্রেন আর কোথায় পাবেন বলুন? তবে খরচটাও নেহাত মন্দ নয়, এই ট্রেনে একবার ভ্রমণের জন্য আপনাকে গুনতে হবে ৫০ ডলার বা প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। 

সূত্র: অ্যামিউজিং প্ল্যানেট, টাইমস অব ইন্ডিয়া, আনইউজুয়াল প্লেসেস, নিউজিল্যান্ড ডটকম, গিসবর্ন সিটি ভিন্টেজ রেলওয়ে

৮৭ হাজার ৮৪০ ডলারে বিক্রি হলো চারিজার্ড পোকেমন আকৃতির চিটো

ডিমের বাজার চড়া, লেয়ার মুরগি ভাড়া নিচ্ছেন মার্কিনরা

বিটিএস তারকা জিনকে চুম্বন, তদন্তের মুখে জাপানি নারী

৯৬ লাখ ডলারের স্বর্ণের কমোড চুরি হয়ে গেল ৫ মিনিটে

এটিএম কার্ড চুরি করে কেনা লটারির টিকিটে জিতলেন ৫ লাখ ইউরো, ভাগ চান মালিক

গিনেস বুকে নাম লেখাল রক্তকণিকার সমান এক ভাস্কর্য

৪০০টি ভাষায় লিখতে পড়তে পারেন ১৯ বছরের আকরাম

তিমির মুখে কিছুক্ষণ, বেঁচে ফিরে অভিজ্ঞতা জানালেন তরুণ

সমুদ্রের তলদেশে টানা ১২০ দিন, বিশ্ব রেকর্ড গড়লেন জার্মান প্রকৌশলী

পচা মাংসের দুর্গন্ধযুক্ত ফুল দেখতে শত শত মানুষের ভিড়