হঠাৎ যদি একটি দালান ফুঁড়ে বা ভেদ করে ট্রেন যেতে দেখেন, কেমন লাগবে বলুন তো? বিষয়টি পিলে চমকে দেওয়ার মতো। তাই বলে আবার গালগপ্পো ভাববেন না। এ ধরনের ঘটনা দেখার জন্য আপনাকে যেতে হবে চীনের এক শহরে।
চীনের জনবহুল শহরগুলোর একটি চংকিং। চারপাশে পাহাড়ঘেরা শহরটিতে স্বাভাবিকভাবেই দালানকোঠার কোনো অভাব নেই। তাই স্থপতি ও নগর পরিকল্পনাবিদদের শহরের ভেতর দিয়ে মনোরেল লাইনের ব্যবস্থা করার জন্য নিজেদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা পুরোটা ঢেলে দিতে হয়েছে। যার ফলাফল, ১৯ তলা এক দালানের ভেতর দিয়ে ট্রেন চলে যাওয়া।
চংকিংয়ের উত্তর, পূর্ব এবং দক্ষিণে দাবা, উশান, উলিং ও দালৌ পর্বত। তাই শহরটির অনেকটা জুড়েই পাহাড়ি ঢালের বিস্তার। তারপর আবার বিপুল জনসংখ্যার শহরটিতে উঁচু অট্টালিকার অভাব নেই। তাই সবকিছু মিলিয়ে উপযুক্ত জায়গার সংকটে ভুগতে হয় নগর পরিকল্পনাবিদ ও স্থপতিদের। ২০০৪ সালে যখন রেল ট্রানজিট-২ নামের একটি মনোরেলের প্রকল্প পাস হলো, তখন দেখা গেল রেললাইন যে পথ দিয়ে যাবে, তার মাঝখানে পড়ছে ১৯ তলা একটি দালান।
দালানটির ষষ্ঠ তলা পর্যন্ত বাণিজ্যিক এলাকা। ৯ থেকে ১৯ তলা পর্যন্ত আবাসিক ফ্ল্যাট। ট্রেনটি যায় সপ্তম ও অষ্টম তলার মধ্য দিয়ে। এখন একটি অট্টালিকার ভেতর দিয়ে ট্রেন চলে যাচ্ছে, শুধু এতটুকুতে যদি আপনার মন না ভরে, তবে জানিয়ে রাখছি, দালানটির সপ্তম-অষ্টম তলায় যাত্রী ওঠানামার জন্য স্টেশনও আছে। এটির নাম লিজবা স্টেশন। কাজেই আক্ষরিক অর্থেই বাসার সদর দরজা থেকে বের হয়েই লাফ দিয়ে ট্রেনে উঠে পড়তে পারেন এই দালানে বাস করা মানুষ।
এখন আপনি নিশ্চয় ভাবছেন, এভাবে এত কাছ দিয়ে ট্রেন চলে যাওয়ায় নিশ্চয় ওই দালানের বাসিন্দাদের কান ঝালাপালা হয়ে যায়। এক্ষেত্রেও দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। দালানটিতে বসানো হয়েছে শব্দ কমানোর যন্ত্রপাতি।
তবে সব সুবিধার মধ্যে টুকটাক অসুবিধা যে নেই তা নয়। যেমন—বছর কয়েক আগে অদ্ভুত এক কারণে চালককে ট্রেন থামাতে হয়। একটি ফ্ল্যাট থেকে কীভাবে যেন বড়সড় একটি কম্বল এসে পড়ে রেলট্র্যাকের ওপরে। একটি লাঠির সাহায্যে কম্বলটা সরিয়ে আবার ট্রেন সচল করেন চালক।
সূত্র: অডিটি সেন্ট্রাল, এনডিটিভি, চায়না ডেইলি, ম্যাশেবল ডট কম