কেউ ভালোবেসে, কেউ একাকিত্বের সঙ্গী হিসেবে, কেউবা নেহাত শখের বশে প্রাণী পুষে থাকেন। এভাবে বিভিন্ন প্রাণী ও মানুষের মধ্যে একধরনের প্রগাঢ় বন্ধন গড়ে ওঠে।
পোষা প্রাণীর তালিকায় একেবারে প্রথমেই রয়েছে কুকুর। এরপর রয়েছে বিড়াল। মাছ, পাখি, খরগোশ, কচ্ছপ। ইঁদুরও পুষে থাকেন অনেকে। এমনকি শখের বশে কেউ কেউ সাপ কিংবা বেজিও পোষেন। এদের সঙ্গে মানুষের গড়ে ওঠে দারুণ বন্ধুত্ব। পরিবারের সদস্য হয়ে যায় এসব পোষ্য। অনেকে নিজের সন্তানের মতো লালন করেন পোষা প্রাণীকে। আদর করে দিয়ে থাকেন বিভিন্ন নামও।
যারা প্রাণী পছন্দ করেন বা প্রতিপালন করেন, আজকের দিনটি তাদের জন্য একটু বিশেষ। কারণ আজ পোষা প্রাণী দিবস। প্রাণীদের প্রতি ভীষণ রকমের ভালোবাসা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাণী কল্যাণ নিয়ে কাজ করা কলিন পেজ নামের এক নারী ২০০৬ সালে দিবসটির প্রচলন করেন। রাস্তাঘাটে বেওয়ারিশ অসহায় প্রাণী কিংবা আশ্রয়কেন্দ্রে অযত্নে থাকা প্রাণীদের জন্যও গভীর মমতা কলিনের। তিনি প্রাণী বেচাকেনা করাকে নিরুৎসাহিত করেন। বরং আশ্রয়কেন্দ্র থেকে দত্তক নেওয়া কিংবা আহত কোনো প্রাণীকে সুস্থ করে প্রতিপালন করার প্রতিই জোর দিয়েছেন কলিন।
পোষা প্রাণী থাকার মানসিক ও শারীরিক উপকারিতা নিয়ে অসংখ্য গবেষণা হয়েছে। এসব গবেষণায় দেখা যায়, পোষা প্রাণী কেবল বিষণ্নতা দূর করে মানসিক প্রশান্তিই দেয় না, বরং হৃদ্রোগ ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের মতো বিভিন্ন রকম শারীরিক জটিলতা থেকে সুস্থতা লাভে ভূমিকা রাখে।
কলিন পেজের প্রচলন করা দিবসটি যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম পালিত হলেও দ্রুত তা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, স্পেন, স্কটল্যান্ডসহ বিশ্বের অনেক দেশে ১১ এপ্রিল পোষা প্রাণী দিবস হিসেবে পালিত হয়। দিবসটিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই নিজের পোষ্যকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট দিয়ে থাকেন। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন হালের সংগীত কিংবা সিনেমা জগতের তারকারাও।
বিশেষ এই দিনে নিজের পোষ্যকে আলাদাভাবে সময় দেওয়ার পাশাপাশি রাস্তাঘাটের অসহায় বেওয়ারিশ প্রাণীদের প্রতি যত্নশীল হতে পারি আমরা। সম্ভব হলে অসহায় কিংবা আহত কোনো প্রাণীর দায়িত্ব নিতে পারি, ব্যবস্থা করতে পারি নিরাপদ আশ্রয়ের। কেবল দিবসকেন্দ্রিক নয়, প্রতিটি দিনই হোক প্রাণীদের প্রতি ভালোবাসার।
সিএনবিসি, ন্যাশনাল টুডে ও ইকোনমিক টাইমস অবলম্বনে তামান্না-ই-জাহান