অনলাইন ডেস্ক
আপনি যদি দেখেন একটি মানুষের হাত কিংবা পা সৈকতে পড়ে আছে, কী করবেন? নিশ্চিতভাবেই পুলিশে খবর দেবেন। সাউথ ওয়েলসের গোওয়ার উপদ্বীপের সাংগেনিস সৈকতের দর্শনার্থীরাও তাই করেছিলেন। অবশ্য পুলিশ আসার পর দেখা গেল যা মনে হয়েছিল বিষয়টি আসলে তা নয়।
সাউথ ওয়েলস পুলিশ ফেসবুকে জানায়, গওয়ারের রসেলে টহল দিচ্ছিলেন পুলিশ সদস্যরা। ওই সময়ই সাংগেনিস সৈকতের থেকে কোস্ট গার্ডদের জরুরি ফোন আসে। তাতে জানানো হয় সোয়ানসির কাছে অবস্থিত সৈকতটিতে মানুষের পা কিংবা হাতের মতো কিছু একটার খোঁজ মিলেছে।
পুলিশ জানায় যে এলাকা থেকে খবর এসেছে সেখানে মৃত সিলসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর শরীরের অংশ ভেসে আসার ঘটনা ঘটে। তবে সাধারণ মানুষের জন্য মানুষ এবং সিলের হাড়ের মধ্যে পার্থক্য করা মুশকিল। কারণ মানুষের মতো সিলদের ‘হাত-পায়ে’ (ফ্লিপার) পাঁচটি করে আঙুল থাকে।
সৌভাগ্যক্রমে পুলিশের টহল দলটির সঙ্গে দেখা হয়ে যায় ‘গওয়ার সিল গ্রুপ’ নামের একটি সংগঠন পরিচালনা করা গ্যারেথ রিচার্ডসের। সিলদের নাড়ি-নক্ষত্র স্বাভাবিকভাবেই তাঁর জানা। অতএব তাঁকে নিয়ে রওনা হন পুলিশ সদস্যরা।
রিচার্ডসসহ পুলিশের দলটি ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সময় লাগে চার ঘণ্টা। তাঁরা সেখানে পৌঁছানোর পর এটি যে সিলের শরীরের অংশ তা নিশ্চিত করেন গ্যারেথ রিচার্ডস। তিনি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্বাই নিউজকে বলেন, বালুতে আটকে থাকা যে জিনিসটাকে মানুষের হাত বলে ভাবা হচ্ছিল তার ছবি পাঠানো হয়েছিল।
‘দর্শনার্থীদের একজন ছবি তুলে পাঠিয়েছিলেন পুলিশের জরুরি বিভাগের কর্মীদের। তবে ছবি দেখে এর পরিচয় উদ্ধার করাটা কিছুটা মুশকিল হচ্ছিল। একটু সন্দেহও হচ্ছিল।’ বলেন রিচার্ডস।
তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে সামনে থেকে দেখার পরই রিচার্ডস নিশ্চিত হন এটি একটি সিলের অংশই। তিনি জানান, সিলটির বয়স আনুমানিক এক বছর। মৃত প্রাণীটির শরীরের কিছু অংশ খেয়ে নিয়েছিল পাখিরা।
‘আমি এটি স্পর্শ করার আগে পুলিশের সঙ্গে দুবার এটি পরীক্ষা করি। কারণ এটি একটি ক্রাইম সিন হতে পারে। আমি সত্যিই আঙুলগুলি বের করেছিলাম। তখনই দেখতে পেলাম যে সংযোজক চামড়া দিয়ে এগুলো সংযুক্ত। তাই বুঝতে অসুবিধা হলো না এটি উত্তর আটলান্টিকের ধূসর সিলের পেছনের ফ্লিপার।’
সৌভাগ্যক্রমেই সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় উপস্থিত ছিলেন গ্যারেথ রিচার্ডস জানান। এতে পুলিশদের যেমন ঝামেলা কমে যায় তেমনি এই অঙ্গ উদ্ধার নিয়ে জলও আর ঘোলা হয়নি।