জেলেদের ছোট্ট এক গ্রাম হেনেগসা। সেখানে দেখা মিলবে এক স্টেডিয়ামের। আদপে একে স্টেডিয়াম বলা যায় কি না, এটা নিয়েও প্রশ্ন থাকতে পারে। দর্শকদের বসার জন্য সেই অর্থে কোনো স্ট্যান্ড বা গ্যালারিও নেই। আন্তর্জাতিক ম্যাচ দূরে থাক, বড় কোনো খেলাও হয় না। শৌখিন একটি ক্লাবের খেলোয়াড় এবং জেলেপাড়ার শিশু-কিশোরেরাই এখানে খেলে কেবল। তার পরও এটা এমন এক স্টেডিয়াম, যেখানে খেলারও দরকার পড়ে না, কেবল একবার একে দেখলেই নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করবেন।
নরওয়ের দ্য হেনেগসা ইদরেতস্লগ স্টেডিয়ন নামের ফুটবল স্টেডিয়ামটি সবার নজর কেড়েছে এর অবস্থানের কারণে। পাথুরে এক দ্বীপে স্টেডিয়ামটি। চারপাশের নজরকাড়া দৃশ্যের মধ্যে আছে খাঁজকাটা সব চূড়ার একের পর এক পর্বত, খোলা সাগর। আশপাশের নানা আকারের পাথরও খেলার মাঠটিকে অন্যরকম এক চেহারা দিয়েছে। সব মিলিয়ে আপনার মনে সন্দেহ হতেই পারে যে এমন সুন্দর কোনো স্টেডিয়াম থাকতে পারে! কল্পলোকের কোনো রাজ্যে চলে এলাম না তো? কিংবা দিবা স্বপ্ন দেখছেন?
কিন্তু শরীরে চিমটি কাটলেই নিশ্চিত হবেন, যা দেখছেন তা সত্যি। অনেকেই একে বিবেচনা করেন পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর স্টেডিয়াম হিসেবে।
গ্রামের কেন্দ্র থেকে মাছ শুকানোর বা শুঁটকি তৈরির র্যাকগুলো পাশ কাটিয়ে সহজেই আপনি পৌঁছে যেতে পারবেন মাঠটির ধারে। মাঠটিতে কৃত্রিম টার্ফ বা ঘাসের চাপড়া বসানো আছে। অবশ্য নরওয়ের অনেক স্টেডিয়ামেই এ ধরনের কৃত্রিম টার্ফের ব্যবহার চোখে পড়বে আপনার। এই স্টেডিয়াম বা মাঠটি মূলত ব্যবহার করেন শৌখিন ক্লাব হেনেগসা আই এলের খেলোয়াড়েরা। তারাই মাঠটির দেখভাল করেন।
স্টেডিয়ামের চারপাশে অ্যাসফল্টের ঢালাই একই সঙ্গে দর্শকদের বসার ও পার্কিংয়ের জায়গার কাজ করছে। তবে স্টেডিয়ামটিতে খুব বেশি মানুষ খেলা দেখার সুযোগ না থাকাটা বড় কোনো সমস্যা নয়, কারণ হেনেগসা গ্রামের জনসংখ্যা প্রায় ৫০০।
নরওয়ের শীতল, অন্ধকার মাসগুলোতেও ফ্লাডলাইট জ্বালিয়ে খেলা চলে স্টেডিয়ামটিতে। তবে বেশি মজা হয় গ্রীষ্মেই, কারণ এখানকার গ্রীষ্মে রাতেও আলো থাকে।
সূত্র: অ্যামিউজিং প্ল্যানেট, ফিফা ডট কম, লাইফ নরওয়ে ডট নেট