শখের জন্য মানুষ কত কিছুই করতে পারে। তবে জাপানের সেইচি সানো এক্ষেত্রেও মনে হয় সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন। ৮৯ বছরের সেইচি গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের বিবেচনায় পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক পুরুষ সার্ফার।
৮০ বছর বয়সে মাউন্ট ফিজি জয়ের পর হঠাৎ তাঁর মনে হলো সার্ফিং নয় কেন? ব্যাস একটি বোর্ডে সওয়ার হয়ে মেতে উঠলেন সাগরের ঢেউয়ের সঙ্গে খেলায়। এখন পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক পুরুষ সার্ফার সেইচি। ২০২২ সালের ৮ জুলাই যখন গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ তাঁর বয়স্ক সার্ফারের খেতাব পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে তখন তাঁর বয়স ৮৮ বছর ২৮৮ দিন।
জাপানের হোকাইডোতে ১৯৩৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর। অর্থাৎ এখন ৮৯ পেরিয়ে ৯০–র দিকে যাচ্ছেন তিনি। স্নাতক শেষের পর নানা ধরনের পেশায়ই দেখা গেছে তাকে। এর মধ্যে আছে ক্যাবারে (রেস্তোরাঁয় অতিথিদের জন্য বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান) শেফ, বিদেশি ক্লাবের ডোরম্যান, কাঠের কারখানায় চাকরি ইত্যাদি। তারপর একপর্যায়ে নিজের ব্যবসা শুরু করেন। গত ৫০ বছরে ধরে এটাই করছেন। আর ছোটখাটো একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে থাকায় কয়েক দশক সেরকম কোনো সময় পাননি। নিজের জন্য সময় বের করতে করতে বয়স ৮০ ছুঁই ছুঁই।
সেইচি জানান, আর সাগরের এই রোমাঞ্চকর খেলায় মনপ্রাণ ঢেলে দেওয়ার অনুপ্রেরণা পান এক অদ্ভুত জায়গা থেকে। ‘একজন ব্যাংক ম্যানেজারের সঙ্গে কাজ করতাম। লক্ষ্য করতাম তাঁর চামড়া বেশ তামাটে। ভেবেছিলাম তিনি একজন গলফার। কিন্তু জিজ্ঞেস করতেই ফিস ফিস করতে জানালেন, সার্ফ করেন।’
সেইচি পেশাদার সার্ফার নন। সার্ফিংয়ের সাধারণ কারিকুরিগুলোয় দক্ষ হওয়ার বিষয়েও বাড়তি আগ্রহ নেই তাঁর। তাঁর প্রিয় কৌশল হলো সার্ফবোর্ডে ১৮০ ডিগ্রির একটি লাফ। কখনো কখনো বোর্ডে বসে চারপাশের দৃশ্য উপভোগ করে সময় কাটে তাঁর।
সানোর প্রশিক্ষক জানান, সেইচির শেখার আগ্রহ দেখে তিনি অবাক হয়েছেন। তেমনি ভেবেছিলেন শিখতে গিয়েই হয়তো একটা দুর্ঘটনায় পড়বেন। তবে একপর্যায়ে আবিষ্কার করলেন যেসব তরুণ–তরুণীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন এই বৃদ্ধ তাঁদের চেয়ে কোনো দিক থেকেই কম নন।
সূত্র: গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, অডিটি সেন্ট্রাল