পর্যটকদের আকৃষ্ট করার মতো অনেক কিছুই আছে পেরুতে। প্রাকৃতিক নানা বৈচিত্র্যময় জায়গা, প্রাচীন সভ্যতা থেকে শুরু করে বছরজুড়ে বিভিন্ন উৎসব—সবকিছুই পাবেন এখানে। বিশেষ করে পেরু ভ্রমণে মাচুপিচুর নামটা চলে আসে সবার আগে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ‘পর্যটকদের জন্য অবশ্যই দেখা উচিত’ এমন জায়গার তালিকায় স্থান পেয়েছে ভিনিকানকা নামের একটি পর্বত। অবশ্য মানুষ একে বেশি চেনে সাত রঙের পর্বত বা রংধনু পর্বত নামে। বুঝতেই পারছেন নানান রঙের বাহারে সেজে আছে ওই পর্বত।
যখন পর্বতটির শরীরের বরফের আবরণ গলে যায়, তখনই চোখে পড়ে চোখজুড়ানো সে দৃশ্য। এখানকার জলবায়ু, বেলে ও চুনা পাথরের উপস্থিতি এবং পর্বতে নানা ধরনের খনিজের উপস্থিতি পর্বতটিকে এমন চেহারা দিয়েছে। আকাশমুখী উঠে যাওয়া সোনালি, বেগুনি, লাল, সবুজাভ-নীল রঙের ছটা মুগ্ধ করে পর্যটকদের।
ভিনিকানকা পার্বত্য এলাকাটি এমনিতে পেরুর ওই এলাকার বাসিন্দাদের কাছে পবিত্র একটি জায়গা হিসেবে পরিচিত। তবে একটা সময় পর্যন্ত পর্যটকেরা খুব বেশি যেতেন না সেখানে। অবশ্য ইনস্টাগ্রামে পর্বতের আশ্চর্য সুন্দর রঙের খেলার ছবি ও স্থানীয় ট্যুর অপারেটরদের প্রচার—সব মিলিয়ে এটি পর্যটকদের নজর কাড়তে দেরি হয়নি। এখন এটি পেরুর কাসকো এলাকার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্যটক আগমন হয় এমন এলাকা। পর্যটন মৌসুমে প্রতিদিন ভিনিকানকাতে দেড় থেকে চার হাজার মানুষ আসেন।
অনেক সময়ই আশ্চর্য সুন্দর এই পর্বতটি দেখতে গিয়ে মানুষকে হতাশ হতে হয়। তবে এর দায় প্রকৃতিরই, মানুষের নয়। মেঘলা আবহাওয়ায় এখানকার রঙের ছটা সেভাবে উপভোগ করা যায় না। আবহাওয়া বেশি খারাপ হয়ে গেলে অবশ্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষ পথটিতে পর্যটকদের চলাচলই বন্ধ করে দেয়।
এমন নানা রঙের ছটার কারণে সহজেই দৃষ্টিগোচর হওয়ার কথা থাকলেও রংধনু পর্বত খুঁজে পাওয়া মোটেই সহজ নয়। পার্বত্য এলাকাটির অনেক গভীরে এর অবস্থান। এমনকি দক্ষ গাইডসহ কুশলী পর্যটকদেরও এটিকে খুঁজে পেতে যথেষ্ট বেগ পেতে হতো একটা সময়। হেঁটে পর্বতচূড়ায় পৌঁছাতে ছয় দিন লাগত। তবে এখন কাসকো থেকে পর্বতটির মোটামুটি কাছে পৌঁছে যেতে পারবেন বাসে।
সূত্র. সিএনবিসি. কম, এটলাস অবসকিউরা