অনলাইন ডেস্ক
একবার না পারিলে দেখো শতবার, অর্থাৎ সাফল্য পেতে চেষ্টার বিকল্প নেই। কালীপ্রসন্ন ঘোষের কবিতার এই চরণকেও ছাড়িয়ে গেছেন এক নারী। বলা যায়, প্রায় হাজার বার চেষ্টা করে সফল হয়েছেন তিনি।
নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে জানা যায়, দক্ষিণ কোরিয়ার এক নারী একবার-দুবার কিংবা শতবার নয়, রীতিমতো ৯৬১ বারের চেষ্টায় ড্রাইভিং লাইসেন্সের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। ঘটনাটি এক যুগ আগের। তবে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে সেই ঘটনা।
চা সা-সুন নামের ওই নারী ২০১০ সালে যখন ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষায় পাস করেন, তখন তাঁর বয়স ৬৯ বছর। ৯৬০ বার ব্যর্থ হয়েও হাল ছাড়েননি তিনি। অবশেষে ৯৬১ বারে সফল হওয়ার পর তাঁকে নিয়ে হইচই পড়ে যায় দক্ষিণ কোরিয়ায়। রীতিমতো স্থানীয়দের কাছে তারকা বনে যান তিনি।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুসারে, টানা তিন বছর সা-সুন সপ্তাহে পাঁচ দিন করে লিখিত পরীক্ষা দেওয়া চালিয়ে গেছেন। কোনো কিছুই তাঁকে পরীক্ষায় বসা থেকে বিরত রাখতে পারেনি।
এরপর ড্রাইভিং স্কিল ও রোড টেস্ট বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এ ক্ষেত্রে প্রতিটিতে টানা চারবার করে অকৃতকার্য হন তিনি। সবশেষে সা-সুন যখন পাস করেন, তত দিনে খরচ হয়ে গেছে ৫০ লাখ ওনের (৪,২০০ ডলার) বেশি।
বর্তমানে চা সা-সুনের বয়স ৮০ বছর। তিনি তাঁর এলাকায় অনেকের অনুপ্রেরণা। সা-সুনের এমন অনুপ্রেরণাদায়ক ঘটনা নজরে আসে দক্ষিণ কোরীয় গাড়ি নির্মাতা হুন্দাইয়েরও। হুন্দাই তাঁকে প্রায় ১৭ হাজার ডলার মূল্যের একটি গাড়ি উপহার দেয়। এমনকি হুন্দাইয়ের একটি বিজ্ঞাপনচিত্রেও অংশ নেন সা-সুন।
বারবার ব্যর্থ হওয়ার বিষয়ে সা-সুন নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছিলেন, ‘বারবার অকৃতকার্য হয়েও আমি কিছু মনে করিনি। আমার কাছে প্রতিদিন ড্রাইভিং টেস্ট দিতে যাওয়া অনেকটা স্কুলে যাওয়ার মতো ছিল। আমি সব সময় স্কুল মিস করতাম।’
গাড়ি চালানোর লাইসেন্স পাওয়ায় এতটা কেন করলেন জানতে চাইলে সা-সুন জানান, বাড়িতে চাষ করা সবজি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। ব্যবসায় উন্নতির জন্য গাড়ি চালানো শেখা দরকার ছিল তাঁর। এ ছাড়া নিজে গাড়ি চালিয়ে নাতি-নাতনিদের চিড়িয়াখানায় নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছাও ছিল সা-সুনের।