অনলাইন ডেস্ক
কেউ যদি ৪৮ ফুট ওপর থেকে মাটিতে পড়ে যান, তবে তাঁর মৃত্যুর আশঙ্কা ৫০ শতাংশ। আর তা শতভাগ হয়ে যেতে পারে, যদি কেউ ৮০ ফুট কিংবা তার চেয়ে বেশি ওপর থেকে পড়ে যান। তবে এই যুক্তি কাজ করেনি যুক্তরাষ্ট্রের জোয়ান মুরাইয়ের ক্ষেত্রে। সাড়ে ১৪ হাজার ফুট ওপর থেকে স্কাইডাইভ করে দুর্ঘটনাক্রমে মাটিতে আছড়ে পড়েও বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি। বলা হয়ে থাকে, একধরনের লাল বিষাক্ত পিঁপড়াই তাঁকে বাঁচিয়ে দিয়েছিল।
এ বিষয়ে রোববার ব্রিটিশ ডেইলি স্টারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জোয়ান মুরাইয়ের জীবনে অবিশ্বাস্য সেই ঘটনা ঘটেছিল ১৯৯৯ সালের ২৫ জানুয়ারি। সে সময় তাঁর বয়স ছিল ৪৭ বছর। যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলাইনায় ৩৬তম বারের মতো স্কাইডাইভ করেছিলেন তিনি।
সেদিন প্লেন থেকে সাড়ে ১৪ হাজার ফুট ওপর থেকে লাফ দিয়ে নির্দিষ্ট সময় পর চেষ্টা করেও মূল প্যারাস্যুটটি খুলতে ব্যর্থ হয়েছিলেন মুরাই। তবে এতে ঘাবড়ে না গিয়ে সঙ্গে থাকা দ্বিতীয় আরেকটি প্যারাস্যুটের রশি খুলে দিয়েছিলেন।
সৌভাগ্যবশত দ্বিতীয় প্যারাস্যুটটি খুলে গেলেও জোয়ান তখনো লাটিমের মতো আকাশে ঘুরছিলেন এবং নিজেকে নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হন। ফলে তাঁর দ্বিতীয় প্যারাস্যুটটিও তালগোল পাকিয়ে যায় এবং প্রায় ৭০০ মিটার ওপর থেকে কোনো বাধা ছাড়াই মাটির দিকে পড়তে থাকেন।
এর ফলে ঘণ্টায় অন্তত ৮০ মাইল গতিতে এসে মাটিতে আছড়ে পড়েন মুরাই। পৃথিবীর কোনো সূত্রেই সেদিন তাঁর বেঁচে থাকার কথা ছিল না। তারপরও তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন।
চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা দাবি করেন, জোয়ান মারে যেখানে পড়েছিলেন, সেই জায়গাটিতে ছিল বিষপিঁপড়ার আস্তানা। মুরাই পড়ে যাওয়ার পর ক্ষুব্ধ পিঁপড়ার দল তাঁকে কামড়াতে শুরু করেছিল। তাৎক্ষণিকভাবে সংজ্ঞা হারানো ছাড়াও শ্বাস নিতে পারছিলেন না মুরাই। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ওই অবস্থার মধ্যে পিঁপড়ার দুই শতাধিক কামড় তাঁর শরীরে অ্যাড্রোনালিন সঞ্চারিত করেছিল। আর এই অ্যড্রোনালিনই তাঁর হৃৎস্পন্দন ধরে রেখেছিল।
প্যারামেডিকরা ঘটনাস্থলে এসে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগপর্যন্ত মুরাইয়ের শরীরে পিঁপড়ার কামড় অব্যাহত ছিল বলে ধারণা করা হয়। প্রাণে বেঁচে গেলেও মুরাইয়ের শরীরের বেশ কয়েকটি হাড় ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল সেদিন এবং কয়েকটি দাঁতও পড়ে গিয়েছিল। কয়েক দিন কোমাতেও ছিলেন তিনি। শরীরকে সচল করার জন্য অন্তত ২০ বার অস্ত্রোপচার হয়েছে তাঁর শরীরে।