অনলাইন ডেস্ক
লিওনার্দো দা ভিঞ্চির মোনালিসায় মোহিত হওয়া মানুষের সংখ্যা কম নয়। আজকের এই দিনে ১৯১১ সালের ২১ আগস্টে ল্যুভর জাদুঘর থেকে চুরি যায় এই বিখ্যাত চিত্রকর্ম। মোনালিসাকে চুরি করেন ল্যুভর জাদুঘরের একসময়কার কর্মী ভিনচেনজো পেরুজ্জা।
ভিনচেনজো পেরুজ্জার যখন ল্যুভর থেকে মোনালিসা চুরি করেছিল, তখন তিনি নিশ্চয়ই অনুমানও করতে পারেননি মোনালিসার অনুপস্থিতি একে মানুষের কাছে আরও বেশি জনপ্রিয় ও পরিচিত করে তুলবে। চিত্রকর্মটির ছবি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদপত্রে ছড়িয়ে পড়ে।
তবে চুরির ঘটনায় প্রবেশের আগে বরং ভিঞ্চির মোনালিসা সম্পর্কে দু-চার কথা বলা যাক। লিওনার্দো দা ভিঞ্চি ছিলেন একাধারে একজন চিত্রশিল্পী, ভাস্কর, স্থপতি ও উদ্ভাবক। তাঁর কালজয়ী সব চিত্রকর্মের মধ্যে মানুষকে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ ও বিস্মিত করেছে মোনালিসা। এক নারীর প্রতিকৃতি মোনালিসা। মুখে যার রহস্যময় হাসি।
যত দূর জানা যায়, লিওনার্দো দা ভিঞ্চি ১৫০৩-১৫০৪ সালে ফ্রান্সেসকো দেল গিওকন্ডো নামে ফ্লোরেন্সের এক ধনী ব্যবসায়ীর অনুরোধে চিত্রকর্মটি আঁকা শুরু করেছিলেন। স্ত্রী লিসা দেল গেরাদিনির একটি প্রতিকৃতি তৈরি করতে বলেছিলেন ওই ব্যবসায়ী।
ধারণা করা হয়, ১৫০৩ থেকে ১৫০৬ সাল পর্যন্ত এটি আঁকেন লিওনার্দো দা ভিঞ্চি। তবে ১৫১৭ সাল পর্যন্ত এটিতে কিছু না কিছু কাজ করেন বলেও জানা যায়। চিত্রকর্মটি কিন্তু কখনোই গিওকান্ডোকে দেননি ভিঞ্চি।
মোনালিসা চুরির দুই বছর পরে, ফ্লোরেন্সের একজন শিল্প ব্যবসায়ী এক ব্যক্তির কাছ থেকে একটি চিঠি পেয়েছিলেন, যেখানে লেখা হয় তাঁর কাছে মোনালিসা রয়েছে। চিঠিতে ‘লিওনার্দো’ নামে একজনের স্বাক্ষর ছিল, ওই ব্যক্তিই আসলে ছিলেন পেরুজ্জা।
ওই আর্ট ডিলার এবং ফ্লোরেন্সের উফিজি গ্যালারির পরিচালকের সঙ্গে সাক্ষাতের একটি সময় ঠিক করার পর পেরুজ্জা হোটেলে চিত্রকর্মটি নিয়ে হাজির হন। সেখান থেকেই পুলিশ এটিকে উদ্ধার করে। এর আগে দুই বছর নিজের অ্যাপার্টমেন্টের একটি ট্রাঙ্কে এটি লুকিয়ে রেখেছিলেন পেরুজ্জা।
এ ঘটনায় পেরুজ্জার ১৪ মাসের জেল হয়। এদিকে মোনালিসা ফিরে আসে ল্যুভরে, যেখানে এটি এখনো আছে।
সূত্র: গার্ডিয়ান, হিস্ট্রি ডট কম, সিএনএন, উইকিপিডিয়া