Ajker Patrika
হোম > নারী

নয়া আইনস্টাইন সাবরিনা পাস্তারস্কি

নয়া আইনস্টাইন সাবরিনা পাস্তারস্কি

আমাজনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেফ বেজোসকে দেখে পদার্থবিজ্ঞানের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করেন সাবরিনা। জেফ বেজোস শুধু ধনী ব্যবসায়ীই নন, পাইলটও ছিলেন। এ ছাড়া স্টিফেন হকিং নিজের গবেষণায় সাবরিনার কাজের উদ্ধৃতি দিয়েছিলেন।

খেলনা গাড়িটার ভেতরে কী আছে, সেটা দেখতে আস্ত গাড়িটি ছিন্নভিন্ন করে ফেলা। আবার বড় কেউ দেখে ফেলার আগে সেটাকে সারানোর চেষ্টা করা। এমনকি কখনো কখনো আস্ত টিভিই খুলে ভেতরের বিস্ময়কর জগৎ দেখা এবং বড়দের চোখে পড়ার আগে সারিয়ে ফেলার প্রাণান্ত প্রচেষ্টা। এসবের জন্য প্রথমে সবার চোখ যায় সাধারণত ছেলেশিশুদের দিকে। কিন্তু মেয়েদের মধ্যেও যে অনেকে সারাইয়ের কাজ করতে ভালোবাসে, সে খবর আছে?

সাবরিনা নামের মেয়েটির কথাই ধরুন। ছোটবেলা থেকে নানান কিসিমের জিনিসপত্র সাড়াই করতে পছন্দ করতেন। এটা করতে করতে তাঁর মনে হয়েছিল, যেসব জিনিস সাড়াই করা যায়, সেগুলো তো নিজে নিজে বানানোও যায়। তাই বুঝি সাবরিনা কিশোরী বয়সেই আস্ত একটা প্লেন বানিয়ে ফেলেছিলেন! তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৪ বছর। হ্যাঁ, সে বয়সেই সাবরিনা প্লেনের ইঞ্জিন বানিয়ে ফেলেছিলেন। তবে তাঁর প্লেনে চড়ে ঘুরে বেড়াতে একটু সময় লেগেছে। দুই বছরের মধ্যে প্লেন পুরোপুরি বানিয়ে চালানোটাও শিখে নেন। এরপর নিজের বানানো প্লেন নিয়ে মিশিগান লেকের ওপর চক্কর মারেন।

সাবরিনার ছোটবেলা থেকে প্লেন বানানোর ভূত মাথায় চেপেছিল এক কানাডিয়ান তরুণের গল্প জেনে। সেই তরুণও অল্প বয়সে পাইলট হয়েছিলেন। সাবরিনা তাঁর সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে-পড়ে বিশাল এক রচনা লিখেছিলেন। সেই তরুণের মতো হতে চেয়েছিলেন সাবরিনা। কিন্তু সম্ভবত ওই তরুণকে তথা অনেক অনেক প্রতিভাবানকেও ছাড়িয়ে গেছেন তিনি। নইলে কি আর সবাই তাঁকে ‘নয়া আইনস্টাইন’ বলে ডাকে!

তাঁর পুরো নাম সাবরিনা গনজালেস পাস্তারস্কি। আমেরিকার শিকাগো শহরে ১৯৯৩ সালের ৩ জুন মার্ক পাস্তারস্কির স্ত্রী মারিয়া গনজালেস জন্ম দেন তাঁর এই মেধাবী কন্যাটিকে। তড়িৎ প্রকৌশলী বাবা সব সময় চেয়েছেন যেন মেয়ে তাঁর স্বপ্ন পূরণে পিছপা না হয়। পরিবারের কাছ থেকে পাওয়া স্বাধীনতাই কাজে লাগিয়েছেন সাবরিনা।

কিছুতেই পড়া মুখস্থ রাখতে পারেন না সাবরিনা। দিন-তারিখ পর্যন্ত ভুলে যান। কিন্তু পদার্থ ও গণিত তো আর মুখস্থ করার বিষয় নয়। সেটা বুঝতে পেরে সাবরিনা এই দুই বিষয়ের প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন সেই ছোট্টটি থাকতে। পদার্থবিজ্ঞান আর গণিতের সমস্যার সমাধান হয় সঠিক হবে, নয়তো ভুল হবে। ভুল হলে সমাধানের অন্য উপায় খুঁজতে হবে আবার। এ রকমটাই বিশ্বাস করেন সাবরিনা পাস্তারস্কি।

এমআইটি, অর্থাৎ ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে পড়ার স্বপ্ন দেখেন বিজ্ঞানপ্রেমী শিক্ষার্থীরা। সাবরিনাও এর ব্যতিক্রম ছিলেন না। কিন্তু আবেদন করার পর ছিলেন অপেক্ষমাণ তালিকায়। পরে শিক্ষকেরা তাঁর প্লেন বানানো এবং চালানোর ভিডিও দেখে মুগ্ধ হয়ে যান। ফলে সঙ্গে সঙ্গে সাবরিনা পেয়ে যান এমআইটিতে পড়ার টিকিট।

সাবরিনাই প্রথম নারী যিনি কম বয়সে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন, পেয়েছেন বৃত্তি। তিনি অ্যাকাডেমিক পড়াশোনায় খুব ভালো ফলাফল করেছিলেন। কৃষ্ণগহ্বর, মহাকর্ষীয় বল ইত্যাদি বিষয় তাঁর কাছে খুব সহজ। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাও করেছেন এগুলো নিয়ে। গবেষণা করতে গিয়ে তিনি বুঝতে পারেন, এত দিন খুব কম জানতেন। এই উপলব্ধি তাঁকে আরও স্পৃহা জুগিয়ে দিল, নতুনকে জানতে আগ্রহী করে তুলল।

বিস্ময়কর বিষয় হলো, বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং নিজের গবেষণায় সাবরিনার কাজের উদ্ধৃতি দিয়েছিলেন। এসব কারণেই একগাদা সম্মান আর পুরস্কার জিতেছেন তিনি। এ ছাড়া ফোর্বস ম্যাগাজিনের অনূর্ধ্ব ৩০ বিজ্ঞান গবেষকের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন সেই ২০১৫ সালে।

পদার্থবিজ্ঞানে অসামান্য অবদানের জন্য বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন পেয়েছিলেন নোবেল পুরস্কার। আইনস্টাইনের পরে এখন এ বিষয়ে আলাপ করলে বিজ্ঞানীরা নাকি সাবরিনা গনজালেস পাস্তারস্কির নামটাই উচ্চারণ করেন। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দাবি করা হচ্ছে, পরবর্তী আইনস্টাইন এই সাবরিনা। আর তাই তাঁকে এখন সবাই ‘নয়া আইনস্টাইন’ নামে চেনে।

সূত্র: ফোর্বস, স্কলারলি কমিউনিটি এনসাইক্লোপিডিয়া এবং ডিসকভারি কানাডা চ্যানেলে প্রচারিত ডেইলি প্ল্যানেট অনুষ্ঠানের তথ্যচিত্র ‘মিট সাবরিনা গনজালেস পাস্তারস্কি একেএ দা নিউ আইনস্টাইন’।

থ্রিলারের জগতে নারীরা

৩৫টি ভাষায় অনুবাদ হয়েছে যাঁর বই

গাড়ির উইন্ডশিল্ড ওয়াইপার আবিষ্কারকের জন্মদিন আজ

নিজের প্রশংসা করুন সাফল্য উদ্‌যাপন করুন

যে অক্ষমতা প্রতিবন্ধকতা হয়ে ওঠেনি

৬০ বছর বয়সে আইন পেশায় এলিজাবেথ

শিল্পীদের মূল্যায়ন হোক কাজের মাধ্যমে

অপমানজনক পোস্ট, ট্রলিং, ছবি বিকৃত করা, ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ

যে বেতার কথা বলে নারীদের জন্য

নারীদের স্বাবলম্বী হওয়ার পথ দেখাচ্ছে ‘সমৃদ্ধি’