সঠিক উপকরণ, নির্দিষ্ট পরিমাণ আর প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে তৈরি পণ্য মানুষের শরীর কিংবা ত্বকের জন্য বিশেষ উপকারী। তবে কৃত্রিম উপাদানে তৈরি পণ্য যেভাবে বাজার দখল করে আছে, তাতে প্রাকৃতিক কিংবা আয়ুর্বেদিক প্রসাধনীগুলো হালে পানি পাচ্ছে না খুব একটা। এই অবস্থায় একজন উদ্যোক্তা যখন আয়ুর্বেদিক পণ্য নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী হন, তখন অনেকের কাছে তা দুঃসাহসী প্রচেষ্টা মনে হতে পারে।
২০১৭ সালে এমনই একটি পদক্ষেপ নিয়েছিলেন নন্দিতা শারমিন। যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যবসায় প্রশাসনে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন তিনি। এরপর একটি ব্যাংকে কাজ শুরু করেন। প্রথম সন্তান জন্মের পর কাজে একটু বিরতি নেন। সে সময় সিদ্ধান্ত নেন, ব্যবসা করবেন। ব্যবসার পণ্য হবে সম্পূর্ণ আয়ুর্বেদিক সৌন্দর্য প্রসাধনী। আয়ুর্বেদ কেন–এ প্রশ্নের উত্তরে নন্দিতা জানালেন তাঁর দাদুর গল্প।
নরসিংদীর একজন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক ছিলেন নন্দিতার দাদু লালমোহন বাউল। পরবর্তী সময়ে দাদুর তৈরি অনেক টোটকা বাবাকেও ব্যবহার করতে দেখেন তিনি। ফলে বলা যায়, আয়ুর্বেদ ও ভেষজ নন্দিতার রক্তে। সে বিষয়ে তাঁর প্রেরণা হয়ে আছেন দাদু লালমোহন বাউল। তাই শিকড়কে অনুসরণ করে ভবিষ্যতের দিকে যাত্রা শুরু করেন নন্দিতা।
আমলকি থেকে প্রাকৃতিক উপাদানসমৃদ্ধ এমন কিছু ভেষজ পণ্য তৈরি হয়, যা ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এমনকি কৃত্রিম সুগন্ধি থেকেও মুক্ত। নন্দিতা জানিয়েছেন, গ্রাহকের ত্বকের কথা বিবেচনা করে পণ্য তৈরির চেষ্টা করে তাঁর প্রতিষ্ঠান। কারণ, ত্বকের ধরন অনুসারে পণ্য ব্যবহার করলে ত্বক ভালো থাকে। আমলকির পণ্যগুলোর দাম ১০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা।
দক্ষতাবলেই এই ক্ষেত্রটিতে নিজের প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান নন্দিতা। প্রাথমিকভাবে আমলকি তার নিজস্ব অনলাইন স্টোর দিয়ে যাত্রা শুরু করে। তবে এখন অনেক ই-কমার্স সাইট, সুপারশপ ও বিভিন্ন দোকানে প্রতিষ্ঠানটির পণ্য পাওয়া যায়। আবার শুধু স্পা সেন্টার ও পারলারে ব্যবহার করার জন্য কিছু পণ্য বাজারে এনেছে আমলকি। এর পণ্য বিক্রির অর্থের একটা অংশ দিয়ে নন্দিতা শারমিন ‘স্পিকস’ নামের একটি দাতব্য সংস্থা পরিচালনা করেন।