নিজস্ব প্রতিবেদক
দিন যত যাচ্ছে, গৃহকর্মী নির্যাতন যেন বাড়ছেই।
বাংলাদেশ শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, দেশে ২৫ লাখ গৃহকর্মী কাজ করে। আর বাংলাদেশ অভিবাসী মহিলা শ্রমিক অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, দেশের ৮০ শতাংশ গৃহকর্মী নারী। গত মার্চ মাসে প্রতিষ্ঠানটি এ তথ্য জানিয়েছে। এ ছাড়া শহরে বাসাবাড়িতে স্থায়ী গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করা কর্মীদের ৮০ শতাংশ অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে বা শিশু।
মহিলা পরিষদের নারী ও কন্যা নির্যাতনবিষয়ক তথ্যমতে, গত ৯ মাসে ৭ জন গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এ ছাড়া ১১ জন হত্যার শিকার হওয়ার পাশাপাশি ১ জন আত্মহত্যা করেছে। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাবে, গত তিন বছরে ঢাকাসহ সারা দেশে ৩৬ জন গৃহকর্মী তাদের গৃহমালিকের বাসায় মারা গেছে; যাদের মধ্যে ৯০ ভাগই নির্যাতনের শিকার।
গৃহকর্মীদের শ্রম আইনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তাই তাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বা প্রশিক্ষণের সুযোগ নেই। এদিকে গৃহকর্তার সঙ্গে ৯৫ শতাংশ গৃহকর্মীর কোনো লিখিত চুক্তি নেই। এই অবস্থায় গৃহকর্মী ও নিয়োগকারীর নিরাপত্তার জন্য চুক্তিপত্র চালুর আহ্বান জানিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কর্মজীবী নারী। সেই আয়োজনে বক্তারা গৃহকর্মীর নিয়োগকারীর সঙ্গে গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতিমালা, ২০১৫-এর আলোকে গৃহকর্মী ও নিয়োগকারীর দায়িত্ব ও অধিকার এবং অফলাইন প্রক্রিয়ায় দক্ষ ও প্রশিক্ষিত গৃহকর্মী নিয়োগ বিষয়ে আলোচনা করেন।
গৃহকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে নথিপত্র থাকা জরুরি। এর ফলে গৃহকর্মী নির্যাতন অনেকটাই কমে যাবে বলে মনে করেন বক্তারা। তাঁরা বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা সরকারের পক্ষ থেকে করা হলেও তার কোনো প্রয়োগ দেখা যায় না। গৃহকর্মীকে নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করতে সরকারের কাছে অতি দ্রুত এই মনিটরিং সেলের কাজ শুরু করার আহ্বান জানান বক্তারা।