হোম > নারী

চাকরির আশায় ছুটছেন সুমী

জসিম উদ্দিন, নীলফামারী

২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর। ছুটে আসছে ট্রেন। বাড়ির পাশে রেললাইনের ওপর বসে খেলা করছে তিন শিশু—বারো বছরের রিমা আক্তার, আট বছরের লিমা আক্তার ও তিন বছরের মমিনুর ইসলাম। খুলনাগামী রকেট এক্সপ্রেস নামের ট্রেনটি কাছাকাছি এলেও শিশুরা রেললাইনের ওপর খেলছিল। এ সময় শিশুদের প্রতিবেশী এবং রেল ব্রিজের ঠিকাদারিকাজের পাহারাদার ফারাসি শামিম হোসেন (৩০) শিশুদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। কিন্তু বিধি বাম। ট্রেনের গতির সঙ্গে পেরে ওঠেননি শামিম। শিশু তিনটির সঙ্গে তিনিও ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যান।

ঘটনাটি ঘটেছিল চিলাহাটি-সৈয়দপুর রেলপথের নীলফামারী সদর উপজেলার বউবাজারে। মারা যাওয়া শিশুরা ছিল নীলফামারী সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের পূর্ব গুড়গুড়ি গ্রামের বেগপাড়ার রিকশাচালক রেজওয়ান আলীর সন্তান। আর নিহত শামিম মনসাপাড়ার মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে।

স্বামী ফারাসি শামিম হোসেনের স্মৃতি আর একমাত্র মেয়ে মেফতাহুল জান্নাতকে বুকে আগলে বেঁচে আছেন সুমাইয়া আকতার সুমী। আর এক বছর আগে ছেলের অকালমৃত্যুতে চিনু বেওয়ার চোখের জল এখনো থামছে না। রুজিরোজগারের একমাত্র ব্যক্তিকে হারিয়ে তিন সদস্যের পরিবারটির এখন দিন কাটছে অনাহারে-অর্ধাহারে।

জনপ্রতিনিধিদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়ায় আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে সুমীর পরিবার।

ঘটনাটি ঘটার পর, গত বছরের ১১ ডিসেম্বর রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। মন্ত্রী ব্যক্তিগত তহবিল থেকে নিহত তিন শিশুর বাবা রিকশাচালক রেজওয়ান হোসেনকে ৫০ হাজার টাকা সহায়তা দেন। এ ছাড়া নিহত সালমান ফারাসি শামিম হোসেনের স্ত্রী সুমীর হাতেও ২০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন সহায়তা হিসেবে। পরে বউবাজারে নিহতদের স্মরণসভায় নিহত শামিমের স্ত্রীকে কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

মন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতিতে আশার আলো দেখেন সুমী। গত ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকায় রেলের ‘পয়েন্টস ম্যান’ পদের জন্য পরীক্ষায় বসেন। ফল প্রকাশ হলে জানতে পারেন তিনি উত্তীর্ণ হননি। আবারও চোখের সামনে ঘনিয়ে আসে ঘোর অন্ধকার।

গত সোমবার বিকেলে সুমাইয়া আকতার সুমীর বাড়িতে বসে কথা হয়। পিতৃহারা মেয়ে মেফতাহুল জান্নাতকে কোলে নিয়ে হতাশাভরা কণ্ঠে তিনি জানান, আত্মীয়স্বজনদের সাহায্যে একটি বছর কোনোরকমে কেটে গেছে। এভাবে আর কত দিন চলবে তিনি জানেন না। মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করাতে হবে।

সুমী বলেন, ‘মেয়েকে বোঝাতে পারছি না যে তার বাবা নেই। সে জানে তার বাবা ঢাকায় চাকরি করছে। এদিকে চাকরির আশায় আশায় বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরছি। স্থানীয় সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর দেড় মাস আগে আমাদের খোঁজখবর নিয়েছেন। তিনি আমার জীবনবৃত্তান্ত নিয়েছেন। এখন শুধু আশায় বসে আছি।’

কথা হয় নিহত শামিমের মা চিনু বেওয়ার সঙ্গে। তিনি জানান, ১১ বছর আগে শামিমের বাবা সৌদি আরবে চাকরিরত অবস্থায় মারা যান। সেই থেকে শামিম সংসারের দেখাশোনা করত। ছেলেকে হারিয়ে এখন তিনি এবং তাঁর পরিবার অসহায়।

চিনু বেওয়া ও সুমী নামের এই দুই নারী জানেন না কীভাবে তাঁরা অর্থের সংস্থান করবেন। মেয়েকে স্কুলেই-বা কীভাবে ভর্তি করাবেন, সে বিষয়ে দুজনই রয়েছেন ধোঁয়াশার মধ্যে।

নারীবান্ধব হচ্ছি কবে

সর্বস্ব হারানো এক নারীর গল্প

নারীদের তালাক দেওয়ার অধিকার আছে

আমি একজন অফিসারের স্ত্রী

সফল সাংবাদিক আইরিন

নতুন বছরে নতুন আশা

সম্মান আমার নয়, আমার কাজের

দাসত্বের বিরুদ্ধে লড়ে চলেছেন ইউজেনিয়া বোনেত্তি

পোস্ট পার্টাম ডিপ্রেশন কাটাতে পরিবারকে এগিয়ে আসতে হবে

পাশ্চাত্যের যে নারী প্রথম গণিত বিষয়ে বই লেখেন

সেকশন