Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

এভিয়েশন সেক্টরের ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরতে হবে

এভিয়েশন সেক্টরের ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরতে হবে

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের কেবিন সেফটি ও সার্ভিস ডিপার্টমেন্টের ম্যানেজার ও সিনিয়র পার্সার হিসেবে কাজ করছেন জেবুন নাহার। তিনি এক যুগের বেশি সময় ধরে এভিয়েশন সেক্টরে চাকরি করছেন। ২০১০ সালের নভেম্বর মাসে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজে কেবিন ক্রু হিসেবে তাঁর চাকরিজীবন শুরু হয়। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসে যোগদান করেন। তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কাশফিয়া আলম ঝিলিক

প্রশ্ন: এভিয়েশন খাতে নারীদের অংশগ্রহণ কেমন দেখছেন? 

উত্তর: এখন সব সেক্টরেই নারীরা ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী নিজেই একজন নারী। অন্যান্য সব সেক্টরে নারীরা নিজেদের প্রমাণ করেছে। আলাদা করে এভিয়েশন নিয়ে বলতে গেলে বলতে হয়, ভালোভাবেই নারীরা এখানে নিজেদের প্রমাণ করতে পেরেছে। একটা সময় এভিয়েশন সেক্টরে শুধু কেবিন ক্রু আর এয়ার হোস্টেস হিসেবে মেয়েরা আসত। কিন্তু এখন ব্যাপারটা সেখানে থেমে নেই। মেয়েরা এখন কেবিন ক্রু, পাইলট, বিভিন্ন এটিসি সেক্টর, ইঞ্জিনিয়ারিং, অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরে আসছে। এখন আসলে সেভাবে মাপার কোনো সুযোগ নেই। এভিয়েশনে কাজ করতে আসার ক্ষেত্রে আগে একটা ট্যাবু ছিল, সেটা এখন আর নেই। মানুষ খুব উইলিংলি এভিয়েশনে কাজ করতে আগ্রহী হয়। 

প্রশ্ন: এই সেক্টরে কি আলাদা কোনো প্রতিবন্ধকতা আছে নারীদের জন্য? 

উত্তর:এখানে নারীদের জন্য আলাদা প্রতিবন্ধকতা আছে। বিশেষ করে যদি কেবিন ক্রুদের কথা বলি বা পাইলটদের, তাঁদের সময়ের কোনো ধরাবাঁধা সীমানা নেই কাজ করার। অন্য চাকরিতে ৯টা থেকে ৫টা বা ১০টা থেকে ৬টা কাজ করা যায়। এভিয়েশনে ব্যাপারটা তেমন নয়। একটা ফ্লাইট খুব সকালে থাকতে পারে অথবা রাতে কিংবা দিনে। এখানে সময় ব্যবস্থাপনা বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে যাঁরা লেখাপড়া করছেন, যাঁরা বিবাহিত ও যাঁদের সন্তান আছে, তাঁদের জন্য। আবার একধরনের সুবিধাও আছে। যেমন যদি কোনো মেয়ে এই সেক্টরে অবিবাহিত অবস্থায় আসেন, বিয়ের পর সন্তান নিয়ে নিজেকে ফিট করে আবারও এই কাজে ফিরে আসতে পারেন। 

প্রশ্ন: বর্তমান প্রজন্মের নারীদের এই সেক্টরে আগ্রহ কেমন?  

উত্তর: এ সেক্টরে নারীদের আগ্রহ অনেক দেখেছি। তার আগে বুঝতে হবে, আমি কোনো সেক্টর নিয়ে কথা বলছি। এখানে আমি কেবিন ক্রু বা পাইলটকে বোঝাচ্ছি না। আমি বলছি, অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, গ্রাউন্ড সার্ভিসের কথা। এখানে অনেক আলাদা আলাদা স্তর আছে। এই সব সেক্টরেই এখন নারীরা কাজ করছেন। আলাদা করে কেবিন ক্রু আর পাইলটের কথা যদি বলি, তাদের জন্য বিশাল একটা অ্যাডভান্টেজ হচ্ছে, তারা এইচএসসি পাস করেও এই কাজের জন্য আবেদন করতে পারে। এভিয়েশনের অন্যান্য সেক্টরে সেটা সম্ভব নয়। পাশাপাশি তারা লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারে। তাই মানুষ এখন অনেক বেশি আগ্রহ বোধ করে এভিয়েশনে আসার জন্য। ছেলেমেয়ে সবাই। 

এভিয়েশনে কাজ করতে আসার ক্ষেত্রে আগে একটা ট্যাবু ছিল, সেটা এখন আর নেই। মানুষ খুব উইলিংলি এভিয়েশনে কাজ করতে আগ্রহী হয়

প্রশ্ন: এ সেক্টরে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে বলে মনে করছেন? 

উত্তর: এখন অনেকেই অনেক বেশি সচেতন এই সেক্টরে আসার জন্য। এমনিতেই সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ। এর মাধ্যমে নেগেটিভ জিনিসগুলো ভাইরাল হলেও মানুষ এখান থেকে অনেক পজিটিভ জিনিসও পায়। মানুষ এখন এমনিতেও এই সেক্টরে আসার জন্য অনেক বেশি আগ্রহ বোধ করে। তারপরেও আমি বলব, আরও অনেক বেশি হাইলাইট করা যেতে পারে। কেবিন ক্রু ও পাইলট হলে আমরা কোন ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাই, সেগুলো আরও বেশি হাইলাইট করা যেতে পারে। তা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে হোক আর পত্রিকার মাধ্যমেই হোক। এই সেক্টর নিয়ে যা কিছু নেগেটিভ ধারণা আছে, সেগুলো নিয়ে যদি আমরা ভালোভাবে কথা বলি, তাহলে মনে হয় মানুষ আরও বেশি আগ্রহ বোধ করবে এই সেক্টরে আসার জন্য। 

আর একটা বিষয় আমার কাছে মনে হয়, অনেকেই ভাবেন এইচএসসি পাস করেই যেহেতু এই চাকরিতে ঢোকা যায়, এটার ভ্যালু কেমন? আসলে ব্যাপারটা এমন নয়। এটা একটা প্লাস পয়েন্ট। এইচএসসি পাস করে একজন মানুষ চাকরির জন্য আবেদন করতে পারছে। এটাই কিন্তু লেখাপড়ার শেষ নয়। এর পাশাপাশি লেখাপড়া শেষ করার সুযোগ রয়েছে। ভালো বেতনের চাকরির পাশাপাশি লেখাপড়া করার সুযোগ রয়েছে, বিষয়টিকে এভাবে দেখা যায়। আমি এটাও বলব, গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে অনেকেই ভাবছেন দেশের বাইরে চলে যাবেন।

তাঁরা এভিয়েশন সেক্টরে চাকরির চেষ্টা করতে পারেন। যে ভালো বেতন এখানে পাওয়া যায়, দেশের বাইরে গিয়ে খুব কষ্ট করে সেই বেতন পেতে হবে। একজন কেবিন ক্রু কিংবা একজন পাইলট বিভিন্ন দেশে যেতে পারেন। এগুলোর সুযোগ অন্য চাকরিতে একটু কঠিন। এই ইতিবাচক দিকগুলো যদি আমরা মানুষের কাছে তুলে ধরতে পারি, তাহলে মানুষ অনেক বেশি এ সেক্টরে আসবে।

বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকারে সমান অধিকারের সুপারিশ নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের

প্রতিবন্ধী নারীবান্ধব স্যানিটারি পণ্য তৈরিতে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের আহ্বান

নারী সংজ্ঞায়িত জৈবিক লিঙ্গের ভিত্তিতে, ট্রান্সজেন্ডার নয়: ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্ট

স্বপ্ন দেখছেন জেসিকা

তালাকের জন্য নিয়ম মেনে নোটিশ পাঠাতে হবে

বিভীষিকাময় হয়ে উঠেছে কেনিয়ার নারীজীবন

নোবেল পুরস্কারজয়ী চতুর্থ নারী রিটা

বিধ্বস্ত ফিলিস্তিন: যে গল্পগুলো থেমে যাওয়ার নয়

হৃদয়ের কথা শুনুন, ভালো থাকুন

শিল্পী খাতুনের কুটিরা জ্ঞানের আলো পাঠাগার