হোম > নারী

যাঁর লেখায় ফুটে ওঠে গভীর মনস্তাত্ত্বিক ভাবনা

ফিচার ডেস্ক 

-হ্যালো!
-হ্যালো! আপনি কি হান কাং বলছেন? 
-ইয়েস। 
-আমি জেনি রিদিয়ান, নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে বলছি। 
-জেনে ভালো লাগল। 
এ বছর সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী কোরিয়ান লেখক হান কাংকে যখন নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানাতে ফোন করা হয়, তখন তিনি ছেলের সঙ্গে ডিনার করছিলেন। খুব আটপৌরে কণ্ঠে, কিছুটা জড়তা নিয়ে কথা বলছিলেন হান। কণ্ঠ শুনে বোঝা যাচ্ছিল, তিনি বিস্মিত এবং আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। 

সাহিত্যে নোবেল পেয়ে কেমন লাগছে, জানতে চাইলে ‘উম্‌...’ বলে কিছুটা সময় নেন তিনি। এরপর বলেন, ‘আমি অভিভূত। এ পুরস্কারের সাপোর্টের জন্য আমি কৃতজ্ঞ।’ এরপর কথোপকথন গড়াতে থাকে হানের লেখা ও জীবনের কিছু অভিজ্ঞতা নিয়ে।
হানের লেখায় সাধারণত ব্যক্তিগত ও সামাজিক সংকট, মানবজীবনের অন্ধকার দিক এবং অস্তিত্বের জটিলতা উঠে আসে। তাঁর লেখার ধরন সরল, কিন্তু মনস্তাত্ত্বিকভাবে গভীর।

২০২২ সালে ফরাসি লেখক অ্যানি এরনোর পর এ পুরস্কার পেলেন হান। এদিকে এশিয়ার প্রথম নারী সাহিত্যিক হিসেবেও উল্লেখ করা হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার সাহিত্যিককে। নোবেল কমিটির ফোনকলের কথোপকথন শুনলে বোঝা যায়, খুব সাদামাটা এবং প্রত্যাশাহীন একজন মানুষ তিনি। ২০১৭ সালে দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি ব্যক্তিগত জীবন উপভোগ করতে চাই। বেশি মানুষের মনোযোগ একজন লেখকের জন্য সব সময় আশীর্বাদ বয়ে আনে না।’

মানুষের কর্মকাণ্ড মানবীয় সহিংসতার ব্যাপারে মনোযন্ত্রণা দিয়ে শুরু হয়। আমি শেষ পর্যন্ত পৌঁছাতে চেয়েছিলাম মানবীয় মর্যাদায়, সেই উজ্জ্বল স্থানে, যেখানে ফোটে ফুল। সেটা ছিল আমার উপন্যাস লিখে চলার বড় অনুপ্রেরণা।

ঔপন্যাসিক বাবা হান সিউং-ওনের ছায়ায় বড় হওয়া হান বেড়ে উঠেছেন সাহিত্যের চরিত্র এবং ভাষার সঙ্গে। তাঁর ভাই হান ডং রিমও একজন লেখক। ২৩ বছর বয়স থেকে নিজের কবিতা প্রকাশ করেন হান। ২০১৬ সালে এসে ‘দ্য ভেজিটেরিয়ান’ উপন্যাসের জন্য ম্যান বুকার পুরস্কার পেয়েছিলেন হান কাং। গল্পের মূল চরিত্র একজন নারী, যিনি মনুষ্য নিষ্ঠুরতা এড়িয়ে চলার জন্য মাংস খাওয়া বর্জন করেন। কলেজজীবনে ই-স্যাংয়ের কবিতার একটি পঙ্‌ক্তি হানকে নাড়া দেয়। পঙ্‌ক্তিটি হলো, ‘আমি বিশ্বাস করি, মানুষের উচিত বৃক্ষে রূপান্তরিত হওয়া।’ ঔপনিবেশিক আমলে যে ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে, তার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর উৎসাহ হান এখান থেকেই পান। সেই অনুপ্রেরণায় তিনি লেখেন দ্য ভেজিটেরিয়ান। যা তাঁকে শুধু ম্যান বুকার নয়, সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারও এনে দিয়েছে।

১৯৭০ সালে জন্ম হানের। ১৯১০ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত চলা জাপানি দখলদারি কিংবা ১৯৫০ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত কোরীয় যুদ্ধ, কোনোটার অভিজ্ঞতা তাঁর অজ্ঞাত নয়। সেই নৃশংসতা এবং মানবীয় দিকগুলো বারবার ফুটে উঠেছে তাঁর উপন্যাসে। ২০১৬ সালে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হান বলেন, ‘মানুষের কর্মকাণ্ড মানবীয় সহিংসতার ব্যাপারে মনোযন্ত্রণা দিয়ে শুরু হয়। আমি শেষ পর্যন্ত পৌঁছাতে চেয়েছিলাম মানবীয় মর্যাদায়, সেই উজ্জ্বল স্থানে, যেখানে ফোটে ফুল। সেটা ছিল আমার উপন্যাস লিখে চলার বড় অনুপ্রেরণা।’

হান কাং ম্যান বুকার পুরস্কার পেয়েছেন ৪৫ বছর বয়সে। এবার সাহিত্যে নোবেল পেলেন ৫৩ বছরে। আমাদের দেশের নারীদের কুড়িতেই বুড়ি বলা হয়। হানের এ বয়সকে অনেক নারী মনে করেন জীবনের শেষ বেলা। জীবনকে তখন অনেক ছোট করে দেখা হয়। অথচ যেকোনো বয়সে নিজের ভালো লাগার কাজ আপনমনে করতে থাকলে যেকোনো সময়, যে কাউকে চমকে দেওয়া যায়।

নারীবান্ধব হচ্ছি কবে

সর্বস্ব হারানো এক নারীর গল্প

নারীদের তালাক দেওয়ার অধিকার আছে

আমি একজন অফিসারের স্ত্রী

সফল সাংবাদিক আইরিন

নতুন বছরে নতুন আশা

সম্মান আমার নয়, আমার কাজের

দাসত্বের বিরুদ্ধে লড়ে চলেছেন ইউজেনিয়া বোনেত্তি

পোস্ট পার্টাম ডিপ্রেশন কাটাতে পরিবারকে এগিয়ে আসতে হবে

পাশ্চাত্যের যে নারী প্রথম গণিত বিষয়ে বই লেখেন

সেকশন