ফিচার ডেস্ক
‘পথে নামলে বোঝা যাচ্ছে আমরা লালনের মাটিতেই থাকি। বন্যার্ত মানুষের জন্য সহমর্মী মানুষের সাহায্য পৌঁছে দিতে আমরা গান গেয়ে হাঁটছি, আজ দ্বিতীয় দিন। একজন অচেনা পথচারী আপন হয়ে উঠলেন।’—এমন একটি ক্যাপশনসহ একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সে ভিডিওতে দেখা যায়, ছোট্ট একটি চায়ের দোকানের চালার নিচে দাঁড়িয়ে গিটার বাজাচ্ছেন এক তরুণ।
সঙ্গে আরও অনেক তরুণ-তরুণী গলা মেলাচ্ছেন। সবাই গাইছেন, ‘সত্য কাজে কেউ নয় রাজি/ সবি দেখি তা না-না-না/ জাত গেল জাত গেল বলে...।’ গানের দ্বিতীয় লাইন থেকে তাঁদের সঙ্গে গলা মেলালেন একজন বয়স্ক ব্যক্তি। হাতে একটা পলিথিনের ব্যাগে কিছু সবজি। দুই হাত তুলে দোল খাওয়া শরীরে গলা মিলিয়ে এগিয়ে গেলেন দলটির দিকে। দলটি গেয়ে যাচ্ছে লালনের গান।
ভিডিওতে যাঁদের দেখা যাচ্ছে, তাঁদের কেউ পড়েন মাগুরার বিভিন্ন স্কুল-কলেজে; আবার কেউ কেউ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে। দলটি বন্যার্তদের সাহায্যের জন্য অর্থ সংগ্রহ করছিল। এই ভিডিও পোস্ট করা হয় নাফিসা নাওয়ার নিঝুম নামের একজন শিক্ষার্থীর ফেসবুক আইডি থেকে। ৩ দিন আগে করা পোস্টটি ২৭ আগস্ট পর্যন্ত ৩৪ হাজারের বেশি শেয়ার হয়েছে। নিঝুম ছাড়াও দলটিতে ছিলেন অতসী, অবন্তী, ঐশী, তনুশ্রী, নিতু, তন্বী, অরণ্য, অন্তর, অভ্র, অমর্ত্য, তূর্য, উৎসব, প্রিয়ম, সোহান, বাপ্পী, শুভ, শুভ্র, সৌরভ, প্রিন্স, পিয়াল, মৃদুল, তনয়া, শ্রেয়া, অর্পিতা, জয়, তুলি, অনু, প্রান্ত, কাব্য, পার্থ, পুষ্প, সিঁথি, মাহাথির, নাবিল ও মুরসালিন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন শিক্ষক পার্থ প্রতীম বিশ্বাস।
তিন দিন দলটি অর্থ সংগ্রহ করে। এরপর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি মাগুরা ইউনিটের মাধ্যমে সেগুলো পাঠিয়ে দেন দুর্গত এলাকার মানুষের জন্য।
লালনের গানের সহজ সুর আর নিঝুমদের স্বতঃস্ফূর্ত গায়কি আকৃষ্ট করেছে নেটিজেনদের। বন্যার ভয়াবহতার মধ্যেও সেই সুর ছুঁয়ে যায় মানুষের মন।