চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় মো. আরমান হোসেন (১৬) নামের এক দশম শ্রেণির ছাত্রের মৃত্যুর দুই দিন পর চিরকুট পেয়েছে তার পরিবার। চিরকুট পাওয়ার পর হত্যার অভিযোগ এনে অজ্ঞাত কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন তার চাচা। এ ছাড়া এ ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। আজ রোববার সকালে উপজেলার হাইলধর ইউনিয়নের মালঘর বাজার এলাকায় মানববন্ধন করেন তাঁরা।
গত বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) বিকেলে স্কুল থেকে ফিরে অসুস্থ হয় স্কুলছাত্র আরমান। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়। গতকাল শনিবার আরমানের খাতার ভেতর থেকে চিরকুট পায় তার পরিবার। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হলে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন আরমানের চাচা মোক্তার আহমেদ।
আজ বিকেলে ওই স্কুলছাত্রের বাড়িতে গিয়ে জানা গেছে, ১১ বছর আগে আরমানের বাবা মারা যান। এরপর আরমানের মা অন্যত্র বিয়ে করেন। আরমান চাচাদের সঙ্গে থাকে এবং স্থানীয় পীরখাইন মৌলানা আশরাফ আলী উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে পড়ে। তার মা ও চাচাদের সঙ্গে পারিবারিক বিষয় নিয়ে আদালতে একটি মামলাও চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন তার স্বজনেরা।
আরমানের চাচা মুহাম্মদ হোসাইন জানান, আরমান বৃহস্পতিবার সকালে স্কুলে যায়। বিকেল চারটায় বাড়ি ফিরলে তাকে বিষণ্ন দেখায়। একটু পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে দ্রুত আনোয়ারা উপজেলা হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। পরদিন তাঁদের সন্দেহ হলে ভাতিজার সহপাঠীদের জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন, বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী পারভেজ ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী ইমন নামে দুই ছেলে সঙ্গে স্কুলে আরমানকে মারধরের ঘটনা ঘটে। পরে সে বাড়ি চলে আসে। তাঁদের সন্দেহ মারধরের কারণে আরমানের মৃত্যু ঘটেছে। বিষয়টি তদন্তের জন্য তাঁরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং সকালে মানববন্ধন করেছেন।
পীরখাইন মৌলানা আশরাফ আলী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যালয়ে ওই দিন ক্রীড়া অনুষ্ঠান ছিল, শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারির কোনো ঘটনা ঘটেছে কি না আমার জানা নেই। কেউ অভিযোগও করেনি এ বিষয়ে। তবে আরমানের মৃত্যুর বিষয়টি তদন্ত করার অনুরোধ জানাচ্ছি।’
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর্জা মুহাম্মদ হাছান বলেন, আরমান হোসেন নামের এক স্কুলশিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে নিহতের চাচা অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের সঙ্গে ওই স্কুলছাত্রের একটি চিরকুটও রয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে করা হচ্ছে।