ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলা উপলক্ষে চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লাসহ প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা জুড়ে মেলা বসেছে। গত ২৪ এপ্রিল থেকে এই মেলা শুরু হয়েছে। এই মেলার প্রধান আকর্ষণ নগরীর লালদিঘী মাঠের জব্বারের বলী খেলা। তবে ঈদের ছুটির কারণে বেচা-কেনা কম হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মেলায় আসা ব্যবসায়ীরা।
গত ১৫ বছর ধরে তিনি এই মেলায় অংশগ্রহণ করছেন ফিরোজ মিয়া। অন্য বছরগুলোতে এ সময় আয় লাখ টাকা পেরিয়ে যেত তাঁর। কিন্তু এবার বিক্রি হয়েছে মাত্র ৩০ হাজার টাকা। দোকান ভাড়া আর কর্মচারীর বেতন দিয়ে লাভের আশা দেখছেন না তিনি। কারণ এবার ঈদের পরপরই মেলা হওয়ায় মানুষজন অন্য বছরের তুলনায় অনেক কম।
অন্য বছর মেলার দ্বিতীয় দিনে আন্দরকিল্লাহ হয়ে লালদিঘী পর্যন্ত মানুষের যানজটের কারণে হাঁটাও মুশকিল হতো। কিন্তু এবার একেবারে ফাঁকা। গাড়িগুলো চলছে স্বাভাবিক।
আন্দরকিল্লাহ মসজিদের পাশে ঝাড়ুর দোকান দিয়েছেন মো. জুয়েল হোসেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যশোর ও খুলনা থেকে প্রায় এক লাখ টাকার ঝাড়ু এনেছি। দুদিনে মাত্র বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার টাকা। অথচ অন্য বছর এই সময়ে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা বিক্রি হতো। এবার লোকসানে পড়তে হতে পারে।’
ঘরের ক্রোকারিজের দোকান দিয়েছেন মো. খসরুর কাজী। তিনি বলেন, ‘অন্য বছর দম ফেলারও ফুরসুরত থাকত না। এবার বসে বসে মাছি মারছি। ঈদের কারণেই মেলা জমেনি।’
মেলা কমিটির সভাপতি জহর লাল হাজারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঈদ হলেও ঐতিহ্য ধরে রাখতে ২৪ এপ্রিল থেকে মেলা শুরু করতে হয়েছে। তবুও মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। এবারে ১০০ জন বলী প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে ৬৮ জনকে বাছাই করা হয়েছে। বলী খেলায় প্রথম পুরস্কার পাবে ২৫ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ২০ হাজার ও তৃতীয় পুরস্কার ১৫ হাজার টাকা। এ ছাড়া খেলায় অংশ নেওয়া প্রত্যেককে দেওয়া হবে দেড় হাজার টাকা।’
১৯০৯ সালে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে লড়ার জন্য দেশের তরুণ যুবকদের শারীরিকভাবে প্রস্তুত করতে বলী খেলার প্রচলন করেছিলেন চট্টগ্রামের বদরপাতি এলাকার বাসিন্দা আবদুল জব্বার। এরপর থেকে শত বছর ধরে এই খেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।