কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় আয়েশা আক্তার (৭) নামের এক শিশুকে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নির্যাতিত শিশুর মামা মো. কামাল হোসেন বাদী হয়ে ব্রাহ্মণপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পুলিশ শিশুটির সৎমা তাসলিমা আক্তারকে আটক করেছে।
উপজেলার সাহেবাবাদ ইউনিয়নের জিরুইন এলাকার রমিজ ক্যাশিয়ারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে।
থানায় দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে জানা গেছে, নির্যাতিত শিশু আয়েশা আক্তারের মা ৯ মাস আগে মারা যান। কিছুদিন পর শিশুটির বাবা মো. বাছির উদ্দিন মেয়ের দেখাশোনার জন্য তাছলিমা আক্তারকে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিন পর তিনি প্রবাসে চলে যান। এরপর থেকে সৎমা শিশুটির ওপর নির্যাতন শুরু করেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ফরিদ উদ্দিনকে অবহিত করা হলে তিনি শিশুটির সৎমায়ের সঙ্গে কথা বলেন। তখন তিনি শিশুটিকে আর মারবেন না বললেও পরবর্তী সময়ে তার ওপর নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেন। গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে শিশুটিকে মারধর করেন তার সৎমা। কৌশলে কেউ এ ঘটনা ক্যামেরাবন্দি করেন। ইউপি সদস্য ফরিদ উদ্দিন ফেসবুকে তাঁর ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে শিশুটির ওপর নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে ভিডিওসহ একাধিক পোস্ট করেন, যা ভাইরাল হয়ে পড়ে।
এদিকে শিশু আয়েশা আক্তারকে তার মামা মো. কামাল হোসেন আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। বর্তমানে সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এ ব্যাপারে শিশুটির বড় ভাই সাবিদুল ইসলাম জয় বলেন, ‘আমার মা মারা যাওয়ার পর বাবা আবারও বিয়ে করেন। বাবা বিয়ের কিছুদিন পর মালদ্বীপে চলে যান। তারপর থেকে আমার সৎমা ছোট বোন আয়েশাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রতিদিনই নির্যাতন করে আসছেন। গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে আমার বোনকে হত্যার উদ্দেশ্যে ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে মারধর করেন। এ সময় আমার বোন চিৎকার দিলে আমার সৎমা তার গলা চেপে ধরেন। আমি আমার বোনের ওপর এই অমানুষিক নির্যাতনের বিচার চাই।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, সৎমায়ের নির্যাতনের বিষয়ে শিশুটির মামা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। শিশুটির সৎমাকে আটক করা হয়েছে।