কুমিল্লায় পার্কে আড্ডারত যুগলের ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে আপলোড করা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের দুই সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে। কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এম. তানভীর আহমেদ শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তানভীর আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ না করলেও আমাদের কাছে মনে হয়েছে, বিষয়টি পুলিশের শৃঙ্খলা পরিপন্থী। যে কারণে আমরা নিজ থেকে বিষয়টিকে আমলে নিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে সাময়িক বরখাস্তের ব্যবস্থা নিয়েছি। তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
জানা যায়, বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে কুমিল্লার ধর্মসাগরপাড় নগর উদ্যানে বসে থাকা দুই কিশোর-কিশোরীর সঙ্গে অসদাচরণ করেন কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের দুই সদস্য। পরে তাঁরা সেই ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন। শৃঙ্খলা পরিপন্থী হওয়ায় এই ঘটনায় ওই দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতেই ওই দুই সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ।
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া এক মিনিট ১০ সেকেন্ডের সেই ভিডিওতে দেখা যায়, নববর্ষের দিন কুমিল্লা ধর্মসাগর পাড়ের নগর উদ্যানে পাশাপাশি বসে গল্প করছিল দুই কিশোর-কিশোরী। এ সময় পেছন থেকে ভিডিও ধারণ করতে করতে এসে তাঁদের সামনে গিয়ে পরিচয় জানতে চান ডিবি পুলিশের একজন সদস্য। দাঁড় করিয়ে একের পর এক প্রশ্ন করতে থাকেন তিনি। এ সময় কিশোরীর মাস্ক খোলার জন্য বলতে গিয়ে পাশে থাকা আরেক সদস্য (ডিবি) ‘তুই’ করে সম্বোধন করেন। এরপরই পরিচয় জানতে যাওয়া সদস্য কিশোরকে ক্ষিপ্ত হয়ে আঞ্চলিক ভাষায় বকাঝকা করেন। ডিবি সদস্যরা এ সময় মেয়েটির বাবার ফোন নম্বর চাইলে তাঁরা ভয়ে মাফ চাইতে থাকে এবং মেয়েটির বাবা বিদেশ থাকেন বলে জানায় ছেলেটি। তখন পাশ থেকে একজন বলতে থাকেন, বিদেশ থেকে আইব এখন, নইলে অফিসে নিয়া যামু। অফিস থেকে অভিভাবক আইসা নিয়া যাইবো। পার্কে আড্ডারত কিশোর-কিশোরীর ভিডিও ধারণ এবং তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয় পুরো কুমিল্লা জুড়ে।
এ বিষয়ে জেলা ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সত্যজিৎ বড়ুয়া জানান, ভিডিওটির বিষয়ে জানতে পেরে আমি পুলিশ সুপার বরাবর একটি প্রতিবেদন দিয়েছি। তার পরিপ্রেক্ষিতেই তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।