নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নে পল্লী বিদ্যুতের ছেঁড়া তারে জড়িয়ে মা-ছেলের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পূর্ব চরবাটা গ্রামের কালা মসজিদ এলাকা থেকে চরজব্বার থানার পুলিশ দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতরা হলেন হাতিয়া উপজেলার সোনাদিয়া ইউনিয়নের চরফকিরা গ্রামের নেছার উদ্দিনের স্ত্রী কোহিনুর বেগম (৩৫) ও তার ছেলে ইয়াছিন (৩)। নিহত কোহিনুর পূর্ব চরবাটা গ্রামে খায়রুল হাসান জমিদার শাহিনের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বেলা ১১টার পর কোহিনুর তাঁর ছেলে ইয়াছিনকে কোলে নিয়ে পাশের বাড়ির দিকে যান। কিন্তু দুপুর পার হয়ে বিকেল হলেও তাঁরা আর বাড়ি ফিরে আসেননি। বিকেল ৫টার দিকে স্থানীয়রা বাড়ির পাশের একটি বাগানে কোহিনুর ও তার ছেলেকে বিদ্যুতের একটি ছেঁড়া তারে জড়িয়ে পড়ে থাকতে দেখেন। স্থানীয়রা বিষয়টি চরজব্বার থানায় অবগত করলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয়রা জানান, গত বুধবার রাতে কালবৈশাখীতে ওই এলাকায় বিদ্যুতের অনেকগুলো তার ছিঁড়ে যায়। বিষয়টি সুবর্ণচর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে জানানো হলেও তারা কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এমনকি মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরও পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে আসেনি।
এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুতের সুবর্ণচর কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত বুধবার রাতে কালবৈশাখীতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গাছ ও গাছের ডাল পড়ে তার ছিঁড়ে যায়। রাতে বিদ্যুৎকর্মীরা বিভিন্ন স্থানে লাইন মেরামতের কাজ করেন। কিন্তু পূর্ব চরবাটায় তার ছিঁড়ে যাওয়ার বিষয়টি আমাদের কেউ অবগত করেনি। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বাগান দিয়ে যাওয়ার সময় অসাবধানতাবসত বিদ্যুতায়িত হয়ে মা-ছেলের মৃত্যুর বিষয়টি তিনি শুনেছেন। বর্তমানে সেখানে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তা ছাড়া নিরাপত্তাজনিত কারণে কর্মীরা সেখানে কাজ করতে যাচ্ছেন না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সমস্যার সমাধান করা হবে।
চরজব্বার ভূঞারহাট ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মো. শাহ্ আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পল্লী বিদ্যুতের একটি ছেঁড়া তারে জড়িয়ে মা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।