লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। তিনি উপজেলার ৪ নম্বর চর মার্টিন ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও স্থানীয় যুবলীগ নেতা ফারুক মুনশি। তার বিরুদ্ধে বাজারের ব্যবসায়ী ও ঘরের মালিক প্রবাসীদের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, চর মার্টিন ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুল করিম মিজির ৮ ছেলে ও ২ মেয়ে। তিনি নদীভাঙনে কালকিনি থেকে মার্টিনে এসে উঠেছেন। এই আবদুল করিম মিজির মেজো ছেলে বেলাল হোসেনের কাছে ওমর ফারুক মুনশি ফেসবুক মেসেঞ্জার মাধ্যমে মোবাইল এবং টাকা দাবি করে। তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে পরিবারটিকে মুন্সিগঞ্জ বাজারে ঢুকতে নিষেধ করেন ফারুক।
১১ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে মিজির ছেলে বেলাল স্থানীয় মুনশিগঞ্জ বাজারে আসলে ফারুক মুনশি তার লোকজন নিয়ে বেলালের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে জখম করে। পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। ভিকটিমের অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এই ঘটনায় ভিকটিমের স্ত্রী তাহমিনা বাদী হয়ে আদালত মামলা করেন। তাহমিনার অভিযোগ, তিনি আদালতে মামলা করেও সুবিচার পাননি। মামলার পরেও আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। আসামিরা তাঁদের হুমকি-ধামকি দিয়ে যাচ্ছে। মামলার বাদী তাহমিনা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘১৮ এপ্রিল আদালতে মামলা করেছি। ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। সুবিচার পাবে কি না জানিনা।’
মুন্সিগঞ্জ বাজার পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘ফারুক মুনশি আমার ঘরে তালা দিয়েছে চাঁদার জন্য। বাজারের ব্যবসায়ী ছবি উল্লাহর কাছ থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা ও আবু তাহের থেকে ২ লাখ ত্রিশ হাজার টাকা আদায় করেছে ফারুক।’
মুন্সিগঞ্জে বাজারের ঘর মালিক মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, ‘৯টি ঘরে তালা দিয়েছে ফারুক মুনশি। আমার ঘরে এখনো তালা। আমার কাছে দুই লাখ টাকা চেয়েছে। আমি দেই নাই তাই আমার ঘরে তালা দিয়েছে।’
ঘর মালিক আবদুল হক জবু বলেন, ‘আমার থেকে ফারুক মুনশি ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা নিয়েছে। মুন্সিগঞ্জের বাজার ব্যবসায়ী খলিল ডাক্তার বলেন, ‘চাকরি দেবে বলে আমার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা নিয়েছে। অনেক আগে থেকেই সে একজন ছোটখাটো সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ।’
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য ওমর ফারুক মুনশি বলেন, ‘প্রতিপক্ষ আমাকে ফাঁসানোর জন্য এসব অভিযোগ তুলছে। আমি কারও কাছে চাঁদা দাবি করি নাই।’
আদালতের মামলার বিষয়ে কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, ‘মামলাটি তদন্তাধীন। কোর্টের আদেশ পাইনি। কোর্টের আদেশ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’