লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরলরেন্স ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ‘ভূমিদস্যু ও মানব পাচারকারী’ নুরুল করিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) উপজেলার করইতলা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
এদিকে নুরুল করিমকে গ্রেপ্তারের খবরে আজ রোববার সকালে এলাকায় আনন্দ মিছিল করেছেন স্থানীয়রা। এ ছাড়া পাড়ায় পাড়ায় মিষ্টি বিতরণ করেছেন এলাকাবাসী।
ডিবি অফিস সূত্রে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত চার শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় নুরুল করিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে জমি দখল, মানব পাচার ও মানুষের টাকা আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অভিযোগে থানা ও আদালতে একাধিক মামলা রয়েছে।
জানা গেছে, নুরুল করিম একসময় ট্রলি চালাতেন। পরে সৌদি আরব গিয়ে মানব পাচারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। তখনকার সময়ে জাল ভিসা দিয়ে মানুষকে বিদেশে নিয়ে কোনো কাজ দিতেন না। ফলে বাধ্য হয়ে মানুষ দেশে ফেরত আসত। তাঁর কাছে পুরো জেলাসহ ওই এলাকার পাঁচ শতাধিক মানুষ প্রতারণার শিকার হয়েছেন। পরে করিম দেশে এসে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হন। এরপর করইতলা এলাকায় নামে-বেনামে অনেক মানুষের জমি দখল করেন তিনি।
করইতলা বাজারের সেলুন দোকানি আরিফ হোসেন জানান, ‘ট্রলি করিম’ তাঁকে বিদেশে পাঠিয়ে কাজ না দিয়ে প্রতারণা করেছেন। ওই সময়ের ঋণের টাকা এখনো পরিশোধ করতে পারেননি তিনি। বাজারের আরেক ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাতের অন্ধকারে নুরুল করিম আমার দোকানঘর ভেঙে দখল করে নেন। অনেকের কাছেই গিয়েছি, কেউ তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। টাকা দিয়ে করিম সবাইকে ম্যানেজ করে ফেলতেন। করিম মানুষের জমি জবরদখল করে এখন কোটি কোটি টাকার মালিক।’
জানতে চাইলে চরলরেন্স ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক (ইউপি) সদস্য মো. নুরুল করিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হয়ে করিম মানুষের দোকানপাট দখল করে ট্রলিচালক থেকে কয়েক কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছেন। জাল ভিসা দিয়ে বিদেশে পাঠিয়ে অসহায় গরিব মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতেন।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কর্মকর্তা সাহাদাত হোসেন টিটু আজকের পত্রিকাকে বলেন, করিমকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চার শিক্ষার্থী হত্যার ঘটনার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পরে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তাঁকে সদর মডেল থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।