ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের দারুল কোরআন আল ইসলামিয়া মাদ্রাসার নাজারাত শাখার শিক্ষার্থী রাশেদ মিয়া (১৫)। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে গত ৪ আগস্ট বুকে গুলিবিদ্ধ হয় সে। উদ্ধার করে প্রথমে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
চিকিৎসকেরা নিশ্চিত করেন, রাশেদের বুকে দুটি গুলি লেগেছে। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বুক থেকে বের করা হয় একটি গুলি। তবে অন্যটি ফুসফুসে আটকে থাকায় বের করতে পারেননি ঢামেকের চিকিৎসকেরা।
ওই অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চলে আসেন রাশেদ। পরে বুকে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হলে গত ২২ আগস্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসা চলছে তার। কিন্তু অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারছে না পরিবার। এতে প্রতিনিয়ত যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে রাশেদ।
এদিকে রাশেদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছয় ভাই-বোনের মধ্যে রাশেদের অবস্থান পঞ্চম। পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় তার উন্নত চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে তার নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া স্থানীয় শিক্ষার্থীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী বায়জিদুর রহমান জানান, রাশেদের সুচিকিৎসার জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে ইতিমধ্যে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রীয়ভাবে রাশেদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থার দাবি জানিয়ে শিক্ষার্থী আরিফুল জামান তপু বলেন, ‘আমরা রাশেদকে হারাতে চাই না।’
গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী রাশেদ মিয়া বলে, ‘সহপাঠীদের সঙ্গে ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করি। গুলি লাগার পর আর কিছু বলতে পারি না। এখনো একটি গুলি বুকের মধ্যে রয়েছে। এতে অনেক কষ্ট পাচ্ছি।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক এ কে এম মুরাদ জানান, রাশেদের ফুসফুসের মধ্যে একটি গুলি এখনো আটকে রয়েছে। আরও উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। না হলে আটকে থাকা গুলি থেকে ইনফেকশন দেখা দিতে পারে।