ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাদা পোশাকে ডিবি–পুলিশের অভিযানে আসামি না পেয়ে স্ত্রীর মাথায় পিস্তল তাকের ঘটনায় আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী বন্যা বেগম। মামলায় পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আটজনকে আসামি করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাকিকুল হাসানের আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে (সদর সার্কেল) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
আসামিরা হলেন–জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম, সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের চান্দিয়ারা দক্ষিণপাড়ার এনামুল হক (১৯), একই এলাকার শামসুল ইসলাম (৩০), তাজুল ইসলাম (৩৯) ও মো. সাগর (২০)।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. শওকত আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে (সদর সার্কেল) নির্দেশ দিয়েছেন।’
মামলার অভিযোগে জানা যায়, আসামি এনামুল উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাদীর স্বামী নূর আলমসহ তিনজনকে আসামি করে গত ২ এপ্রিল সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। গত শুক্রবার বাদীর বাড়িতে সুন্নতে খতনার অনুষ্ঠান ছিল। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মামলায় উল্লেখিত পাঁচ আসামি নূর আলমকে গ্রেপ্তার করতে বাদীর (বন্যা) বাড়িতে প্রবেশ করে।
আসামি নূর আলমকে না পেয়ে বন্যার মাথায় পিস্তল তাক করে ডিবির এসআই রেজাউল করিম। স্বামীর কথা না বললে বন্যাকে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেয় আসামিরা। এক পর্যায় বন্যাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। পরে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা ও শ্লীলতাহানি করে। প্রতিবাদ করলে বন্যার শ্বশুর মাকসোদ আলী ও সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ননদ তাসলিমা বেগমকে (৩৩) মারধর করেন তারা।
ডিবির এক সদস্য বন্যার নয় বছর বয়সী মেয়ে নিশাতকে গলায় চেপে ধরে চর-থাপ্পড় মারেন এবং মাথার ডান পাশে পিস্তল দিয়ে আঘাত করেন। এগিয়ে গেলে বন্যার স্বজন লাকী বেগমকে মাথায় ও কোমরে আঘাত করে। ডিবির এসআই সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কোমর থেকে লোহার শিকল বের করে বাদীসহ সবাইকে মারধর ও নির্যাতন করে।
ডিবির এসআই একপর্যায়ে একাধিক গুলি ছোড়েন। পরে তারা চার লাখ ৯৫ হাজার টাকা, বন্যার গলা থেকে দুই ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন ও দুই হাতে থাকা চার ভরি ওজনের স্বর্ণের দুটি বালা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
এর আগে গতকাল সোমবারও আদালতে অভিযোগটি দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু কাগজপত্রে ত্রুটি থাকায় অভিযোগটি আদালত নথিভুক্ত করেনি। পরে বাদীর আইনজীবী কাগজপত্রে তুলে নিয়ে আসেন।