মাদারীপুরে ইতালিপ্রবাসীর সঙ্গে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর বিয়ে ঠিক হয়। আজ বুধবার কাজি অফিসে বিয়ের আয়োজন করা হয়। খবর পেয়ে হাজির হন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় আদালত কাজি, বরের চাচা ও কনের বাবাকে এক মাস করে কারাদণ্ড দেন।
অভিযান পরিচালনা করেন মাদারীপুর সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল ইসলাম।
দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন বরের চাচা ও কালকিনি উপজেলার জয়নাল হাওলাদার (৪৫), কনের বাবা ও মাদারীপুর পৌরসভার সৈয়দারবালী এলাকার মো. ওসমান শেখ (৪৪), কুলপদ্বী এলাকার ফারুক কাজী (৪৮)।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, আজ বুধবার সকালে দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে বয়স বাড়িয়ে কুলপদ্বি বাজার এলাকার ফারুক কাজীর অফিসে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে, এমন সংবাদ পান মাদারীপুর মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক কার্যালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত উপপরিচালক মাহমুদা আক্তার কণা। তিনি আগে থেকেই ওই কাজির অফিসে আরেকটি বিয়ে পরাতে হবে বলে লোকজন বসিয়ে রাখেন।
পরে কালকিনি উপজেলার ভাটাবালী গ্রামের ইতালিপ্রবাসী রুবেল চৌকিদারের (৩০) সঙ্গে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। এ সময় তাদের হাতেনাতে ধরা হয়। তাৎক্ষণিক কাজিসহ বর ও কনের পরিবারের লোকজনকে আটক করা হয়।
পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল ইসলাম কাজি, বরের চাচা ও কনের বাবাকে এক মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মাদারীপুর মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালকের কার্যালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত উপপরিচালক মাহমুদা আক্তার কণা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ১৮ বছর বয়সের আগেই কোনো বিয়ে নয়। সরকারের এই পদক্ষেপ পালনে কঠোর অবস্থানে মাদারীপুর মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও সদর উপজেলা প্রশাসন। এই কাজ যারা করবে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
মাহমুদা আক্তার কণা আরও বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হাতেনাতে বাল্যবিয়ের ঘটনাটি ধরতে পেরেছি। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেল দেওয়া হয়েছে। প্রায় ৫ বছর আগে এই ফারুক কাজী বাল্যবিবাহ দেওয়ায় মুচলেকা নেওয়া হয়েছিল। তিনি আর কখনো বাল্যবিবাহ দেবেন না বলে স্বাক্ষর দেন। তারপরও তিনি আবারও একই কাজ করায় জেল দেওয়া হয়েছে।’
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, কোথায়ও কোনো বাল্যবিবাহের আয়োজন করা হলে কঠোরভাবে তা প্রতিরোধ করা হবে। আয়োজক, কাজিসহ সবাইকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে করে কেউ একটিও বাল্যবিবাহ দেওয়ার সাহস না পান।