প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতার কারণে ব্যয় বাড়ে। সেই সুযোগে দুর্নীতিও কিছুটা বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। উন্নয়ন সহায়তা ঘোষণা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেছেন।
আজ বুধবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে আগামী ৪ বছরের সুইস সহায়তার ঘোষণা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ড দূতাবাস। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তা, আন্তর্জাতিক ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের সদস্য এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিগণ অংশ নেন। বাংলাদেশে সফররত সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশনের (এসডিসি) মহাপরিচালক প্যাট্রিসিয়া ড্যানজি এই সহযোগিতা কর্মসূচি উপস্থাপন করেন।
সুইজারল্যান্ড ও বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদ্যাপনের প্রাক্কালে বুধবার সকালে ঢাকায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সুইজারল্যান্ড বাংলাদেশের জন্য ২০২২-২০২৫ মেয়াদে নেওয়া উন্নয়ন সহযোগিতা কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশে এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে সুইজারল্যান্ড আগামী চার বছরে ১ হাজার ১ শ কোটি টাকা বরাদ্দ দেবে।
সুইজারল্যান্ডের বৈদেশিক নীতির অগ্রাধিকার এবং দেশটির আন্তর্জাতিক সহযোগিতা কৌশলের আঙ্গিকে নতুন এই সহযোগিতা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে বৈশ্বিক এজেন্ডা ২০৩০ এবং অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন অগ্রাধিকারের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ। বাংলাদেশের স্থিতিশীল ‘এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনে’ সহযোগিতা করা; সমৃদ্ধ, ন্যায়সংগত ও সহনশীল একটি সমাজ গঠনে উৎসাহিত করা এবং শান্তিপূর্ণ সামাজিক সহাবস্থানে ভূমিকা রাখাই হলো সুইস উন্নয়ন সহযোগিতা কর্মসূচি ২০২২-২০২৫ এর সামগ্রিক লক্ষ্য।
প্রথমবারের মত বাংলাদেশ সফরে এসে ড্যানজি বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, সুইস সহায়তা প্রাপ্ত নারী ও পুরুষ এবং অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রাধিকার সমূহ এবং রোহিঙ্গা সংকটসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করেন। তিনি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির এবং কক্সবাজার ও গাজীপুর জেলায় সুইজারল্যান্ডের অর্থায়নে পরিচালিত বিভিন্ন মানবিক ও উন্নয়ন প্রকল্পসমূহও পরিদর্শন করেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনকারী দেশগুলোর মধ্যে সুইজারল্যান্ড অন্যতম। বিগত পাঁচ দশকে অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন সহযোগিতা, মানবিক সহায়তা এবং সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সহযোগিতাসহ সকল ক্ষেত্রে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও বিস্তৃত ও গভীরতর হয়েছে। দেশ দুটি ২০২২ সালে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তী উদ্যাপন করবে।