সাভারের হোটেল ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম লস্কর হত্যামামলায় আন্তজেলা ডাকাত দলের আরও ১ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) পিবিআই। রোববার (০৫ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর তুরাগ থানার ধউর চৌরাস্তা এলাকায় অভিযান চালিয়ে জসিম মিয়া (৩৫) নামের ওই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই ঘটনায় এ নিয়ে আটককৃতদের সংখ্যা ১৪ জন, যাদের সবাই ড্রাইভার ও হেলপার।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) সালেহ ইমরান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, জসিম মিয়া ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানার আলিপুর গ্রামের মৃত লেছু মিয়ার ছেলে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ডাকাতির সঙ্গে নিজেকে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। গ্রেপ্তারকৃত জসিম সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের কাভার্ড ভ্যান চালানোর পাশাপাশি ডাকাতি করতেন বলেও উল্লেখ করেন এসআই।
এ মামলায় গ্রেপ্তারকৃত ১৩ জনই আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করানোর জন্য আজ জসিমকেও আদালতে পাঠানো হবে। একই সঙ্গে এ মামলার সঙ্গে জড়িত আরও ৪-৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ৫ই অক্টোবর ভাগ্নের সঙ্গে দেখা করার জন্য নিজ কর্মস্থল মিরপুর থেকে সাভারের জামগড়া এলাকায় যান হোটেল ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম লস্কর। ওই দিন সর্বশেষ সন্ধ্যা ৭টায় তাঁর মেয়ের সঙ্গে মোবাইলে কথা হয়। পরে রাত ১২টার দিকে একই মোবাইল থেকে বাসার নম্বরে ফোন করে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি রবিউল খুনের তথ্য জানায়। পরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বলিয়ারপুর এলাকায় যমুনা ন্যাচারাল পার্কের গেটের পাশ থেকে রবিউল ইসলাম লস্করের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী হাফিজা বেগম অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর-১৬। পরে মামলাটির তদন্তভার পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকা জেলার এসআই সালেহ ইমরান। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছর ১৩ই অক্টোবর সাভার থেকে ডাকাত দলনেতা বসির মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যমতে সাভার, আশুলিয়া, ধামরাই ও ডেমরা থেকে আরও ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সালেহ ইমরান জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা গত বছর ৪ অক্টোবর কুয়াকাটা যাওয়ার কথা বলে ৩ দিনের জন্য ঢাকা-টাঙ্গাইল রুটের নিরালা পরিবহনের একটি বাস রিজার্ভ নেয়। পরে ওই বাস দিয়ে মানিকগঞ্জ ও রাজবাড়িতে ডাকাতি করে ফেরার সময় আশুলিয়ার নবীনগর থেকে রবিউল ওই বাসে উঠে। এই বাসের ভেতরে ডাকাতির সময় রবিউল চিৎকার করলে ডাকাত সদস্যরা তাঁকে চেপে ধরে ও দলনেতা হুইল রেঞ্জ দিয়ে আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই রবিউল মারা যায়।
জানা যায়, তারা সাভার, ধামরাই ও যাত্রাবাড়ীতে থেকে আন্তজেলা ডাকাত দল প্রতিষ্ঠা করে দীর্ঘদিন ধরে বাসে ডাকাতি করে আসছিল। বিভিন্ন রুটের গাড়ি ভাড়া নিয়ে স্টিকার পরিবর্তন করে রং দিয়ে বিভিন্ন রুটের নাম লিখে ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ডাকাতি করে আসছিল চক্রটি।