গাজীপুর মহানগরীর জয়দেবপুর রেল জংশনের আউটার সিগন্যালে যাত্রীবাহী ট্রেন ও তেলবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনো শেষ হয়নি উদ্ধারকাজ। এ কারণে ঢাকা-জয়দেবপুর ডাবল রেললাইনের একটিতে ট্রেন চলাচল করলেও অপরটি এখনো বন্ধ রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গাজীপুর মহানগরীর জয়দেবপুর রেল জংশনের আউটার সিগন্যালে যাত্রীবাহী ট্রেন ও তেলবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনো শেষ হয়নি উদ্ধারকাজ। উদ্ধারকাজ শেষ হতে আজ সারা দিন লেগে যেতে পারে। ফলে ঢাকার সঙ্গে ময়মনসিংহ ও উত্তরবঙ্গ চলাচলকারী সব ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ছয়টি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে যাত্রীরা।
আজ শনিবার দুপুরে সরেজমিনে জয়দেবপুর রেল জংশনে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন জেলার শত শত যাত্রী ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তাঁরা নির্ধারিত সময়ে ট্রেন স্টেশনে না আসায় অপেক্ষা করছন। অনেকে স্টেশন মাস্টারের কাছে গিয়ে খোঁজ নিচ্ছেন তাঁদের ট্রেন কখন আসবে। কিন্তু কোন ট্রেন কখন আসবে, তা তাঁরাও সঠিকভাবে বলতে পারছেন না। যাত্রীদের চাপ, দুর্ঘটনা-পরবর্তী ওপরমহলের চাপে তাঁদের দিশেহারা অবস্থা।
কয়েকজন যাত্রী জানালেন, ট্রেন আসার বিলম্বের কারণে গরমে তাঁরা খুব সমস্যায় পড়েছেন। ট্রেন কখন আসবে, তা কেউ বলতে পারছেন না।
একই অবস্থা জামালপুরগামী তিস্তা ট্রেনের যাত্রী আশরাফুলের। তিনিও গ্রামের বাড়ি জামালপুরে যাওয়ার জন্য স্টেশনে অপেক্ষায় বসে আছেন। শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় জয়দেবপুর জংশন থেকে ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও দুপুরেও তাঁর ট্রেন স্টেশনে আসেনি।
জয়দেবপুর রেল স্টেশনের কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টার আল ইয়াসবাহ বলেন, এক লাইনে ট্রেন চলাচলের কারণে ঢাকা থেকে নেত্রকোনায় চলাচলকারী মহুয়া কমিউটার (ট্রেন নং ৪৩−৪৪), ঢাকা-জয়দেবপুর চলাচলকারী তুরাগ কমিউটার (ট্রেন নং তুরাগ কমিউটার ১–৪) এবং ঢাকা-জামালপুর চলাচলকারী জামালপুর কমিউটারের (ট্রেন নম্বর-৫১/৫২) শনিবারের উভয়মুখী যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা থেকে কলকাতাগামী মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা প্রায় তিন ঘণ্টা বিলম্ব হয়েছে।
জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনের সিগন্যাল ইন্সপেক্টর মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর থেকেই ট্রেন চলাচলে এবনরমাল টাইমিংয়ে পাস করছেন তাঁরা। জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশন থেকে শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ময়মনসিংহগামী বলাকা এবং ঢাকাগামী বুড়িমারী এক্সপ্রেস ছেড়ে চলে গেছে। একই লাইনে দুই দিকে ট্রেন চলাচলে শিডিউল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. হানিফ মিয়া জানান, দুর্ঘটনার দুই ঘণ্টা পর এক লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। একটি লাইন বন্ধ থাকায় রেশনিং পদ্ধতিতে ট্রেন চালানো হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী ধীরাশ্রম স্টেশন এবং জয়দেবপুর জংশনে ট্রেন অপেক্ষায় রেখে একটি একটি করে ট্রেন দুই দিকে চলতে দেওয়া হচ্ছে। এতে করে কোনো ট্রেনেরই শিডিউল ঠিক থাকছে না।