বিদেশে লোক পাঠানোর সংস্থা ‘অপশন ম্যানপাওয়ার ওভারসিজের’ মাধ্যমে সৌদি আরবের আভা শহরে গিয়ে প্রতারণা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যান মো. হানিফ (৩৪) নামের এক শ্রমিক। মৃত্যুর পাঁচ মাস পর মরদেহ দেশে ফিরেছে। আজ সোমবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে তাঁর পরিবারের কাছে লাশটি হস্তান্তর করা হয়েছে।
এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক আজ রাতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, মৃত্যুর দীর্ঘ পাঁচ মাস পর এপিবিএন ও ব্র্যাকের সহযোগিতায় নিহত হানিফের মরদেহ রোববার (৩ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ বিমানের বিজি ৩৪০ ফ্লাইটে দেশে ফিরে আনা হয়। বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায় সরকারি খরচে এটি করা হয়েছে। পরে সোমবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে তার পরিবারের কাছে লাশটি হস্তান্তর করা হয়। মো. হানিফ নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার আবদুল মোতালেবের ছেলে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউল হক জানান, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করা হানিফ অভাবের তাড়নায় ছোটবেলা থেকে নির্মাণ শ্রমিকের (রাজমিস্ত্রি) কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। চলতি বছরের ১২ মার্চ রিক্রুটিং এজেন্সি ‘অপশন ম্যানপাওয়ার ওভারসিজ’ (আরএল ১৩৮৪) এর মাধ্যমে সৌদি আরবে গমন করেন তিনি। দেশটিতে যাওয়ার পর তাকে রাজমিস্ত্রি কাজ না দিয়ে আভা শহরে ভেড়া চরানোর চাকরি দেওয়া হয়। সেখানে যে মালিকের অধীনে তাঁকে চাকরি দেওয়া হয়েছিল ওই ব্যক্তি তাঁকে নানা ধরনের শারীরিক নির্যাতন করতেন। বিষয়টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে জানানোর পর তিনি যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। সেখানে নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ১৬ জুন রিয়াদের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একইদিন স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় হানিফ মারা যান।
জিয়াউল হক বলেন, ‘এয়ারপোর্ট এপিবিএন এ বিষয়ে সৌদিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করলে গতকাল (রোববার) অবশেষে তাঁর মৃতদেহ সরকারি ব্যবস্থাপনায় দেশে ফেরত আসে। পরে আজ (সোমবার) সকালে ভিকটিম হানিফের স্ত্রী আফিয়া খাতুন এবং তার ভাই বিমানবন্দরে তার লাশ গ্রহণ করেন।’