রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার মৌরাট ইউনিয়নের খান্দুয়া গ্রামের দড়িপাট্টা এলাকায় ইউপি সদস্য মো. নাসির উদ্দিন ওরফে গাজীকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। তিনি মৌরাট ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। গতকাল সোমবার রাত ১০টায় হামলার এ ঘটনা ঘটে।
হামলার ঘটনায় আজ মঙ্গলবার সকালে পাংশা মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় এজাহারভুক্ত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, হামলায় আহত নাসির উদ্দিন খান্দুয়া গ্রামের মো. ছলিম মন্ডলের ছেলে। তিনি বর্তমানে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহত ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিন জানান, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আনসার আলী মন্ডলকে হারিয়ে তিনি বিজয়ী হন। নির্বাচনের পরাজয় মেনে নিতে পারেননি আনসার আলী মন্ডল। পরাজয়কে কেন্দ্র করেই তাঁর ওপর এ হামলা হয়েছে। পরাজয়ের পর থেকে আনসার তাঁর ওপর হামলা করার অপচেষ্টা চালিয়ে আসছিল। গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে তিনি বাড়ির পাশে জহিরের দোকানে বসে গল্প করছিলেন। এ সময় আনসার বাহিনীর সদস্যরা হামলা চালায়। এতে নেতৃত্ব দেয় আনসার আলীর ছেলে মো. উজ্জ্বল মন্ডল। হামলায় রিদয়, আলামিন, শরিফ, নয়ন, নান্নু, কামাল, ও হামিদুলসহ ১০-১২ জন অংশগ্রহণ করে। তাঁকে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে ও লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। এ সময় হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এরপর তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর পাঠানো হয়।
আনসার আলী মন্ডল বলেন, ‘নির্বাচনে আমি অংশগ্রহণ করে পরাজিত হয়েছি। তবে হামলার ঘটনা মিথ্যা। আমাকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। আমার কোনো বাহিনী নেই। সুতরাং বাহিনীর প্রধান হওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই। এছাড়া হামলার সময় আমি ঘটনাস্থলেও ছিলাম না।’
পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক স্মৃতা ইয়াসমিন বলেন, ‘রাত ১১টার দিকে তাঁকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। তাঁর মাথায় ধারালো অস্ত্রের একটি বড় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়াও তাঁকে মারধর করা হয়েছে।’
পাংশা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) উত্তম কুমার ঘোষ বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে আনসার আলী মন্ডলকে প্রধান আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এরই মধ্যে এজাহারভুক্ত তিনজন আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের রাজবাড়ী আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিরা পলাতক রয়েছে। তাঁদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।’