ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে ৫টায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে একদল বহিরাগত হামলা চালিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এর আগে শিক্ষার্থীরা ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে আসছিল। হামলার পর তাঁরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে প্রায় ১২ ঘণ্টা পর যানচলাচল শুরু হয়।
আন্দোলনরত একাধিক শিক্ষার্থী জানান, শিক্ষার্থীরা ধাওয়া খেয়ে ক্যাম্পাসে গিয়ে সংগঠিত হয়। পরে বিকেল সোয়া ৫টার দিকে লাঠিসোঁটা নিয়ে ঘোনাপাড়ায় আন্দোলনের স্থলে গিয়ে ৩/৪টি গাড়ি ভাঙচুর করে। এতে পুনরায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় এলাকাবাসীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যা ৬টার দিকে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে সড়কগুলোতে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়াল বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণ অপপ্রচার। ছাত্রলীগ আন্দোলনের পক্ষে। স্থানীয় কিছু দোকানদার ও ভ্যানচালকদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ঝামেলা থেকেই এ আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছে।’
রাতেই তিন যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে শহরতলির সোনাকুড় গ্রামের পিয়াস (২২), সুইপার কলোনির অন্তর (২২) এবং জীবনকে (২৩) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দ্রুত সব অপরাধী শনাক্ত করে গ্রেপ্তার ও শাস্তির আওতায় আনার দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোপালগঞ্জের ঘোনাপাড়া মোড়ে অবরোধ করে বিক্ষোভে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আটক হরিজন সম্প্রদায়ের দুজনের মুক্তির দাবিতে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে সামনের রাস্তায় ময়লা ফেলে সড়ক আটকে দিনভর বিক্ষোভ করে ওই সম্প্রদায়ের লোকেরা।
এদিকে আজ দুপুরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. অতীশ কুমার মল্লিক জানান, শিক্ষার্থীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। আগামী শনিবারের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
জানা যায়, গোপালগঞ্জ শহরের নবীনবাগ হেলিপ্যাডের সামনে থেকে বন্ধুর সঙ্গে হেঁটে মেসে যাচ্ছিলেন ওই শিক্ষার্থী। পথিমধ্যে ৭/৮ জন যুবক তাঁদের টেনে হিঁচড়ে রাস্তার পাশেই জেলা প্রশাসন স্কুলের নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে যায়। সেখানে সহপাঠীকে আটকে রেখে মারধর করে এবং ওই শিক্ষার্থীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রাজিউর রহমান বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ধর্ষণের শিকার শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছি এবং আমিই বাদী হয়ে এ ঘটনায় গোপালগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেছি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুর রহমান (প্রশাসন) বলেছেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে তিন যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদেরও দ্রুত গ্রেপ্তারে সক্ষম হব।’