মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় স্থানীয় সংসদ সদস্যের অনুসারী চার নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার ঝিটকা বাজারে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলায় আহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আব্দুল আজিজ, ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুস্তাকিম চৌধুরী রিফাত, উপজেলার বাল্লা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আবদুর রশিদ এবং ছাত্রলীগের কর্মী ফয়েজ আহমেদ।
জানা গেছে, সম্প্রতি বালুমহাল ইজারা পান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমানের এক আত্মীয়। ইজারা না পেয়ে ক্ষুব্ধ স্থানীয় সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের অনুসারী পক্ষ নির্ধারিত স্থানের বাইরে থেকে বালু তোলার অভিযোগ করে। এর প্রতিবাদে গতকাল বুধবার বিকেলে তারা উপজেলার ঝিটকা এলাকায় মানববন্ধনের আয়োজন করে। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে উপস্থিত হয় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের লোকজন। এ সময় কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে হামলায় দুজন আহত হন। সেখান থেকে ফেরার পথে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের দুই নেতা আহত হন।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লুতফর রহমান বলেন, ‘আমরা ঝিটকায় আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে অবস্থান করছিলাম। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যানের লোকজন হামলা করলে ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুস্তাকিম চৌধুরী রিফাত ও কর্মী ফয়েজ আহত হন। রিফাতকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলজার হোসেন বাচ্চু বলেন, ‘হামলায় আওয়ামী লীগের উপজেলা কমিটির সাবেক প্রচার সম্পাদক আব্দুল আজিজ আহত হয়েছেন। এ ছাড়া আরও দুজন আহত হয়েছেন বলে শুনেছি।’ কে বা কারা হামলা করেছে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
আহত আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল আজিজ বলেন, ‘লেছড়াগঞ্জ বাজার থেকে আমি বাড়ি ফিরছিলাম। পথে উপজেলা চেয়ারম্যানের ২০-২৫ জন লোক আমার ওপর হামলা করে।’
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। মানববন্ধনের বিরোধিতা করায় নাজমুল মোল্লা, শুভ, নাইম নামের তিনজনকে মারধর করেছে মানববন্ধনের পক্ষের লোকজন।’
হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন কুমার আদিত্য বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহরিয়ার রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, অভিযোগ পেয়ে সেখানে গিয়ে নির্ধারিত জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করতে দেখা গেছে। আবারও এমন অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উপজেলা চেয়ারম্যানের লোকজন ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাদের মারধর করেছে। আমি প্রশাসনকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। পদ্মা নদীর বালুমহালের নির্দিষ্ট জায়গার বাইরে থেকে বালু তোলা হচ্ছে বলে এলাকাবাসী আমাকে জানিয়েছে। সে বিষয়টিও প্রশাসনকে জানিয়েছি।’