ধর্ষণের ঘটনার বিচার দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উত্তাল ক্যাম্পাস। আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ধর্ষণ ও নিপীড়নবিরোধী গণপোস্টারিং কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে আন্দোলন অব্যাহত রাখতে ‘নিপীড়নবিরোধী মঞ্চ’ গঠন করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
গণপোস্টারিং কর্মসূচির সময় বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ ছাত্র ইউনিয়নের আহ্বায়ক আলিফ মাহমুদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের ঘটনার আগেও বহু নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিপীড়কদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই আছে।’
একই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবনের সামনে মানববন্ধন করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে পুনরায় নতুন কলাভবনে এসে শেষ হয়।
এ সময় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র ইব্রাহীম মৃধা বলেন, ‘যারা ধর্ষকদের আশ্রয় ও প্রশ্রয়দাতা তাদের আমরা হুঁশিয়ার করে দিতে চাই। এ ধরনের ঘটনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে। প্রশাসনের কাছে দাবি থাকবে যে, যেসব শাস্তি ধর্ষকদের দেওয়া হয়েছে, তা যেন যথাযথ বাস্তবায়ন হয়। তা না হলে আরও কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’
মঞ্চের সংগঠক ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক পারভীন জলি বলেন, ‘সকল নিপীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়তে নিপীড়নবিরোধী মঞ্চ গঠন করা হয়েছে। যারা এই আন্দোলন পরিচালনা করবে, তাদের নিয়ে কমিটি করা হবে। এই মঞ্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অংশীজনের। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান সকল অন্যায়-অপকর্ম, নিপীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে কাজ করবে।’
যৌন নিপীড়নে ঘটনায় এক শিক্ষকের বিচারে গঠিত স্ট্রাকচার্ড কমিটির সমালোচনা করে অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্ট্রাকচার্ড কমিটি গঠনের দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও তার বিচার নিশ্চিত করা হয়নি। উপাচার্য কমিটির প্রধান হয়েও বিচার করছেন না। আমরা স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, এ ধরনের ঘটনার পুরোপুরি দায় উপাচার্যকে নিতে হবে।’
এ বিষয়ে ঢাকা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস ও ট্রাফিক, উত্তর বিভাগ) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। গ্রেপ্তারদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, বাকিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আর ভুক্তভোগী এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে রয়েছেন।’
আরও পড়ুন: