বেপরোয়া দখল এবং ভরাটে ক্রমবর্ধমান ও অব্যাহত আগ্রাসনের ফলে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল এখন প্রায় মৃত। অথচ মহানগরী ঢাকার জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতির জন্য বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মহামান্য হাইকোর্টের সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকলেও ঢাকার প্রাণ বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল পুনরুদ্ধারে বিভিন্ন সময়ে বিচ্ছিন্ন কিছু উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে মাত্র, যা কোনো কাজে আসেনি।
আজ শনিবার পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনসহ (পবা) সমমনা ১৬টি সংগঠন আয়োজিত মানববন্ধনে এসব কথা তুলে ধরেন বক্তারা। এ সময় আলোচকেরা সিএস রেকর্ড অনুযায়ী বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল উদ্ধারের দাবি জানান।
বক্তারা বলেন, ঢাকার পশ্চিমাঞ্চলের বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেলসংলগ্ন মোহাম্মদপুর, রায়েরবাজার, হাজারীবাগ, কালুনগর, ভাগলপুর, নবাবগঞ্জ, শহীদনগর, কামালডাঙ্গা, ইসলামবাগসহ এ এলাকার খালগুলোও এখন মরতে বসেছে। এসব এলাকা বর্ষার সময় সামান্য বৃষ্টিতেই ভয়াবহ জলাবদ্ধতার মুখে পড়ে। অধিক বৃষ্টিতে অনেক ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে জনগণের দুর্ভোগ তখন আরও প্রকট আকার ধারণ করে।
মানববন্ধনে আলোচকেরা বলেন, বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর কঠোর অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল রক্ষার তোড়জোড় চললেও নদীর জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর উদ্ধারকৃত জায়গা খনন করে নদীকে ফিরিয়ে না দিলে পুনরায় দখল হচ্ছে এবং সংকুচিত নদী সংকুচিতই থেকে যাচ্ছে। নদীর প্রশস্ততা ও গভীরতা বৃদ্ধি পায় না অর্থাৎ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের মূল উদ্দেশ্যই বাস্তবায়িত হয় না।
বক্তারা আরও বলেন, নদী ও জলাশয় ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনের চোখের সামনে দখলদারেরা মরিয়া হয়ে উঠেছে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলের শেষ স্পন্দনটুকু কেড়ে নেওয়ার জন্য। স্থানীয় জনসাধারণ, মহানগরবাসী, পরিবেশ বিশেষজ্ঞসহ সুশীল সমাজ দখলের এই জঘন্য প্রতিযোগিতা বন্ধে সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপের দাবি জানাচ্ছে।
পবার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সোবহানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চের সভাপতি আমির হাসান মাসুদ, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের সহসভাপতি কে এম সিদ্দিক আলী, মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্রের মহাপরিচালক মাহবুল হক, পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগের সভাপতি নাজিম উদ্দীন, দেবীদাস ঘাট সমাজ কল্যাণ সংসদের সভাপতি মো. মুসা, বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট সাইক্লিস্টের সমন্বয়কারী রোজিনা আক্তার, ঢাকা যুব ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম, মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্রের পরিচালক মো. মিজানুর রহমান, ক্লিন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা মোস্তফা কামাল প্রমুখ।