মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ‘উপদেষ্টা’ পরিচয় দেওয়া মিয়া জাহিদুল ইসলাম আরেফীর কখনো জো বাইডেনের সঙ্গে দেখা বা কথা হয়নি, বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশিদ। তিনি বলেন, ‘২০২১ সালে করোনা চলাকালীন ১০-১৫ জনের একটি জুম মিটিং হয়। সেখানে বাইডেনের স্ত্রীর সঙ্গে জুম মিটিং এ দেখা হয়েছে আরেফীর। এ ছাড়া আর কখনো তাদের কোনো দেখা বা কথা হয়নি।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় হাই সিকিউরিটি কারাগারে মিয়া জাহিদুল ইসলাম আরেফীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় হাইসিকিউরিটি কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা আজকের পত্রিকাকে জানান, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে একটি দল সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কাশিমপুর কারাগারে প্রবেশ করেন। তারা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সোয়া ২টার দিকে কারাগার ত্যাগ করেন। জিজ্ঞাসাবাদের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন—ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার খন্দকার নুরুন্নবি, উপপুলিশ কমিশনার আকরামুল হোসেন, অতিরিক্ত উপপুলিশ আজহারুল ইসলাম।
ডিবি প্রধান হারুন বলেন, ‘অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীকে গ্রেপ্তারের পর তাঁকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেছি, কিছু বিষয়ের উত্তরও পেয়েছি। তবে কিছু বিষয় অস্পষ্ট ও দ্বিমত পোষণ করায় কারাগারে গিয়ে জাহিদুল ইসলাম আরেফীকে জিজ্ঞাসাবাদ করি।’
জাহিদুল ইসলাম আরেফীর বরাতে হারুন বলেন, ‘তিনি আমাদের বলেছেন-আমি ট্র্যাপে পড়েছি। বিএনপি নেতা সারওয়ার্দী আমাকে ট্র্যাপে ফেলেছে। আমাকে দেশে এনে বিভিন্ন নেতা-কর্মীর নম্বর দেয়। মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাস, আবদুল্লাহ আওয়াল মিন্টু এদের নম্বর দিয়ে বলেছে, তাদের সাথে কথা বলার জন্য। আমি আবদুল্লাহ আউয়াল মিন্টুর বাসাও গিয়েছি। এই সবগুলো কাজ করার জন্য সহায়তা করেছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী।’
এর আগে গত ২৮ অক্টোবর (শনিবার) বিএনপির মহা সমাবেশকে ঘিরে সংঘর্ষের পর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলন করেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক জাহিদুল ইসলাম আরেফী। তিনি নিজের পরিচয় দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা হিসেবে। পরে ২৯ অক্টোবর রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আরেফীকে বিমানবন্দর পুলিশ আটক করে ডিবির হাতে তুলে দেয়। এরপর গত ৩১ অক্টোবর থেকে তিনি কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের হাই সিকিউরিটি কারাগারে বন্দী আছেন।