সকাল থেকেই ছোট্ট তিতির সারা ছাদ দৌড়ে বেড়াচ্ছে। কিছুক্ষণ পরপর বাবার কাছে এসে জানতে চাইছে পেন (প্লেন) কখন আসবে? বাবা মুচকি হেসে বলছে, এই তো! একটু পর।
কিছুক্ষণ পরই বিকট শব্দে একটি হেলিকপ্টারকে উড়তে দেখা গেল আকাশে। তিতির এক দৌড়ে ঢুকে গেল বাবার কোলে। ওমা! প্লেন দেখবা না বলে বাবা হেসেই খুন। ছোট্ট তিতির বাবার বুকের ভেতর থেকেই ছোট ছোট চোখ করে তাকিয়ে দেখছে নীল আকাশে লাল-সবুজের চোখধাঁধানো প্রদর্শনী, সঙ্গে উড়ছে বাংলাদেশের পতাকা।
শুধু তিতির আর তার বাবা নয়, ফার্মগেট বিজয়সরণি এলাকার প্রায় সব বাড়ির ছাদেই দেখা মিলেছে দর্শনার্থীদের। লাল-সবুজের এই চমৎকার প্রদর্শনীটি বিজয়ের ৫০ বছর উপলক্ষে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ফরমেশন ফ্লায়িং। এটি বিজয় দিবস ফ্লাই পাস্ট ও যুদ্ধবিমানের মিগ-২৯-এর অ্যারোবেটিক ডিসপ্লে। মিগ-২৯-এর পাশাপাশি এই প্রদর্শনীতে অংশ নেয় ট্রেইনি জেট কে-ডব্লিউ৮।
মিগ-২৯ যুদ্ধবিমানের অ্যারোবেটিক প্রদর্শনীতে দেখা মিলল নীল দিগন্তে লাল-সবুজের আভা। যা দেখে তিতিরের মতো আশপাশের সব ছাদ থেকে দেখা গেল উচ্ছ্বসিত হাততালি।
তিতিরের বাবা আমেরিকাপ্রবাসী সুজয় গোমেজ বলেন, ‘আমরা তিন মাস আগেই দেশে ফিরেছি। তিতিরের জন্ম আমেরিকাতেই, তাই জন্মের পর এই প্রথম সে দেশে এসেছে। গতকাল তাকে এই প্রদর্শনীর কথা বলছিলাম। সে অনেক ছোট, হয়তো মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে এখনই বললে সে বুঝবে না। কিন্তু এই প্রদর্শনীটি আশা করি তার মনে থাকবে। ধীরে ধীরে সে দেশ সম্পর্কেও জানতে পারবে।’
তিতিরের পাশের বাড়িতেই থাকে মুগ্ধ। সে নবম শ্রেণিতে পড়ে। মুগ্ধ জানায়, প্রতিবছরই সকালে এই শো দেখার জন্য ছাদে আসে সে। আজ সকাল থেকেই গলিতে মাইকে দেশের গান বাজছিল।
গতকাল রাতে আব্বু আর ছোট ভাইয়ের সঙ্গে সংসদ ভবনে গিয়েছিল। অনেক ভালো লাগছে এই সাজসজ্জা। প্রতিবছরই ঢাকা এমন লাল-সবুজ আলোয় আলোকিত হয়। কিন্তু এবারেরটা আসলেই অন্য রকম!