সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্পর্ক করে ব্যক্তিগত ছবি ছড়ানোর ভয় দেখিয়ে টাকা আত্মসাতের নেপথ্যে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সংঘবদ্ধ একটি চক্রের সন্ধান পেয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। চক্রের বাংলাদেশি দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
আজ রোববার মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে এই তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, ফেসবুকে ভারতীয় শিক্ষার্থী পরিচয়ে বাংলাদেশি তরুণদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে চক্রটি। পরবর্তী সময় তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে উভয়ে ঘনিষ্ঠ হয়ে নিয়মিত ভিডিও কলে কথা বলে। এ সময় ভারতীয় চক্রটি সেই ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও রেকর্ড করে রাখে। এরপর সেগুলোকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে বাংলাদেশি তরুণ-তরুণীদের ব্ল্যাকমেল করে। লাখ টাকা দাবি করে। এরপর চক্রের বাংলাদেশি এজেন্ট বিকাশের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা আদায় করে। এই ঘটনায় একজন ভুক্তভোগী ডিবির কাছে অভিযোগ করেন। পরবর্তীকালে অভিযোগের ভিত্তিতে চক্রের বাংলাদেশি দুই এজেন্টকে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ বিভাগ) গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার দুজন হলো মো. টিপু সুলতান ও মো. মোসলেম রানা। গত বুধবার রাজধানীর বনানীর কড়াইল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। শাহবাগ থানার মামলায় দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার দুজনের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইমের (দক্ষিণ বিভাগ) অতিরিক্ত উপকমিশনার সাইফুর রহমান আজাদ বলেন, গ্রেপ্তার দুজনই কলেজ শিক্ষার্থী। তাঁদের মধ্যে টিপু রাজধানীর হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের ও মোসলেম রানা তিতুমীর কলেজে স্নাতকের শিক্ষার্থী। এই চক্রটি চাকরিজীবী, শিক্ষার্থীসহ সমাজের প্রতিষ্ঠিতদের টার্গেট করে প্রতারণার ফাঁদ পাতত। এরপর তাদের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশের ভয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিত।
এই চক্রে ভারতীয় ও পাকিস্তানি নাগরিকেরা জড়িত উল্লেখ করে অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, এই চক্রের মাস্টারমাইন্ড শাকিল নামে এক ব্যক্তি, তিনি ভারতীয় নাগরিক। তাঁর সঙ্গে পাকিস্তানি পারভেজ নামে আরেক ব্যক্তি জড়িত। চক্রটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তরুণীদের দিয়ে ফাঁদ পেতে ব্ল্যাকমেল করত। চক্রের ভারত ও পাকিস্তানি সদস্যরা ছবি ভিডিও দিয়ে ব্ল্যাকমেল করত, বাংলাদেশি এজেন্টরা ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে টাকা নিত। আদায় করা টাকার ২৫ শতাংশ করে পেতেন দেশের এজেন্টরা।