গতকাল শুক্রবার রাত ৯টা ৫ মিনিটে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের চারটি বগি পোড়ানো হয়। ট্রেন পোড়ানোর সিদ্ধান্ত ওই দিন সন্ধ্যার সময়ই এক ভার্চুয়াল মিটিংয়ে নেন বিএনপির নেতারা। ১৭ মিনিটের ওই ভার্চুয়াল মিটিংয়ে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক খন্দকার এনামুল হক এনাম।
আজ শনিবার সকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
এ ঘটনায় এ পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন যাত্রাবাড়ী থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী, যুবদল নেতা কাজী মনসুর আলম, মো. ইকবাল হোসেন স্বপন, মো. রাসেল, দেলোয়ার হাকিম বিপ্লব, মো. সালাউদ্দিন, মো. কবির ও মো. হাসান আহমেদ।
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে কাজী মনসুরের দেওয়া জবানবন্দির ভিডিও ডিএমপি মিডিয়া সেন্টার থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে ট্রেনে আগুন দেওয়ার পরিকল্পনার বিষয়ে জানিয়েছেন তিনি।
জিজ্ঞাসাবাদে কাজী মনসুর ডিবিকে জানান, তাঁরা গতকাল একটি ভার্চুয়াল মিটিং করেন। মিটিংয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক খন্দকার এনামুল হক এনাম, যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়নসহ আরও অনেকে ছিলেন। প্রায় ১৭ মিনিট ধরে মিটিং চলে। ভার্চুয়ালি এই মিটিংয়ে দুটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রথম সিদ্ধান্ত ভোটকেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণ করার জন্য, যাতে ভোটাররা ভয়ে সেখানে না আসে। আর দ্বিতীয় সিদ্ধান্ত হয় ট্রেনে আগুন দেওয়ার। এ সময় মিটিংয়ে যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়ন জিজ্ঞাসা করেন ট্রেনে আগুন দিতে কে পারবে? তখন মিটিংয়ে উপস্থিত একজন রাজি হন ট্রেনে আগুন দেওয়ার বিষয়ে।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের পরিকল্পনা হিসেবে বিএনপির হাইপ্রোফাইল নেতারা ভিডিও কনফারেন্স করেন। কনফারেন্সে প্রথমে আসেন মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনাম। এরপর আসেন সদস্যসচিব রবিউল ইসলাম নয়ন, যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ গাফফার, ইকবাল হোসেন বাবলু, একজন দপ্তর সম্পাদক ও কাজী মনসুর।
তাঁরা ভিডিও কনফারেন্সে এসে বৃহত্তর ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী ট্রেনে বিশেষ করে নরসিংদীর কাছে সুবিধাজনক স্থানে অগ্নিসংযোগ করার কথা বলেন। আরেকটি স্থানও তাঁরা নির্ধারণ করেন। কমলাপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ লাইনের আপ-ডাউনে সুবিধাজনক স্থানে যাত্রীবাহী ট্রেনে আগুন লাগিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করার পরিকল্পনা করেন।
আরও পড়ৃন: