নরসিংদীর রায়পুরায় অস্থায়ী সবজির হাটে নিয়ন্ত্রণ হারানো কাঁচামালবাহী ট্রাকের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার যাত্রী, সবজি বিক্রেতাসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এই দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত আরও চারজন। আজ রোববার ভোর ৬টার দিকে রায়পুরা উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মাহমুদাবাদ এলাকার নামাপাড়ায় (মেশিনঘর) এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন রায়পুরার মাহমুদাবাদের মেশিনঘর এলাকার আলাউদ্দিন মিয়ার ছেলে সিদ্দিক মিয়া (৫৫), বীরশ্রেষ্ঠ মতিউরনগর গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে মো. সিদ্দিক (৬২), বেলাব উপজেলার পোরাদিয়া এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে আবুল কালাম ও ভৈরব ফেরিঘাট এলাকার বজলু মিয়া (৬০), উপজেলার নীলকুঠি এলাকার সোনা মিয়ার ছেলে আবুল কালাম। দুর্ঘটনার পর আবুল কালামকে (৫৫) তাঁর স্বজনেরা আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা।
সেই সঙ্গে আহত ব্যক্তিদের ভৈরব ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
খবর পেয়ে ভৈরব হাইওয়ে থানার পুলিশ ও স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহত ব্যক্তিদের লাশ উদ্ধার করেন। এ সময় দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাটি জব্দ করে হাইওয়ে থানায় নেওয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘মহাসড়কে সিএনজিসহ নিষিদ্ধ যানবাহন পুলিশের সামনেই অসময়ে চলাচল করে। সিএনজির কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনাগুলো ঘটছে। কিছুদিন পরপর ছোট-বড় দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যায়। এ রকম দুর্ঘটনা থেকে মুক্তি চাই।’
এ বিষয়ে ভৈরব হাইওয়ে থানার পরিদর্শক মো. মোজাম্মেল হক জানান, ভৈরব থেকে গ্যাস নিয়ে ফেরা সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে চাপা দিয়ে সবজিবাজারে ঢুকে উল্টে গিয়েছিল ট্রাকটি। এ দুর্ঘটনায় নিহত চারজনের মধ্যে দুজন অটোরিকশার যাত্রী, অন্য দুজন সবজি বিক্রেতা। ট্রাক ও অটোরিকশা দুটি জব্দ করা হয়েছে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রায়পুরা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজগর হোসেন, রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজিজুর রহমান, ভৈরব হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক, মির্জাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনজুর এলাহীসহ আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ জুন রায়পুরার মাহমুদাবাদ এলাকায় একই স্থানে নিয়ন্ত্রণ হারানো কাভার্ড ভ্যানের চাপায় পাঁচজন সবজির ক্রেতা-বিক্রেতা নিহত হয়েছিলেন। তাঁরা হলেন মাহমুদাবাদের মেশিনঘর এলাকার বাচ্চু মিয়ার ছেলে শাজাহান মিয়া (৫০), জনাব আলীর ছেলে বাচ্চু মিয়া (৬৪), সেন্টু মিয়ার ছেলে রিপন মিয়া (৩৫), তায়েব মিয়ার ছেলে মাসাকিন মিয়া (৪৫) ও ফজর আলীর ছেলে ফারুক মিয়া (৫০)। তাঁরা সবাই ওই দুর্ঘটনার সময় দাঁড়িয়ে সবজি বিক্রি করছিলেন।