আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস উদ্যাপন করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। গত বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জের পূর্বাচলে অবস্থিত ফায়ার সার্ভিস মাল্টিপারপাস ট্রেনিং গ্রাউন্ডে সকাল ৯টায় প্রধান অতিথি হিসেবে এই দিবসের উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল। এর আগে সকাল ৭টায় বিভিন্ন স্থান থেকে আসা স্বেচ্ছাসেবকদের রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়। সকাল ৯টায় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম অনুষ্ঠান স্থলে আগমন করেন। এ সময় তিনি বেলুন উড়িয়ে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস-২০২৪-এর উদ্বোধন করেন। এরপর তিনি অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে অনুষ্ঠান মঞ্চে আসেন।
পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠের মাধ্যমে আলোচনা অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা স্বেচ্ছাসেবকদের উদ্দেশে বলেন, সরকারি বাহিনীর সদস্যদের পক্ষে এককভাবে বন্যা, ভূমিকম্প ইত্যাদি দুর্যোগ মোকাবিলা করা দুরূহ। এ ক্ষেত্রে আপনারা পেশাদার বাহিনীর সঙ্গে কাজ করে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। এ জন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। বিশেষ করে ভূমিকম্পের ন্যায় ভয়াবহ দুর্যোগ মোকাবিলায় সকল স্তরে স্বেচ্ছাসেবক এবং তাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি এবং প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মহাপরিচালক স্বেচ্ছাসেবকদের অবদান স্মরণ করে বলেন, ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ভবনধস, ২০১৯ সালে চুড়িহাট্টা কেমিক্যাল দুর্ঘটনা, এফআর টাওয়ার অগ্নি দুর্ঘটনা, ২০২২ সালে বিএম কন্টেইনার ডিপোর অগ্নিদুর্ঘটনা এবং ২০২৩ সালে বঙ্গবাজার ও খাজা টাওয়ার অগ্নিদুর্ঘটনায় আপনাদের সাহসী অংশগ্রহণ আমরা দেখেছি। আপনাদের স্বেচ্ছাসেবী মনোভাব ও নির্ভয় অংশগ্রহণ দেশ ও জাতির দুর্যোগকালীন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ জন্য আমি আপনাদের সবার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের প্রেস ব্রিফ করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এরপর স্বেচ্ছাসেবক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে শুরু হয় বর্ণিল শোভাযাত্রা। প্রধান অতিথি শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। পূর্বাচল ট্রেনিং গ্রাউন্ড থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন স্থান ঘুরে পুনরায় ট্রেনিং গ্রাউন্ডে এসে শোভাযাত্রা সম্পন্ন হয়। এরপর অনুষ্ঠানে অগ্নিনির্বাপণ ও অপারেশনাল কার্যক্রমে সহযোগিতার স্বীকৃতি হিসেবে ২২ জন স্বেচ্ছাসেবকের হাতে স্বীকৃতি সনদ ও ক্রেস্ট তুলে দেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল। সবশেষে স্বেচ্ছাসেবকদের অংশগ্রহণে সাজ-সরঞ্জামের বাস্তব ব্যবহার ভিত্তিক অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার বিষয়ে প্রশিক্ষণ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে ২ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবকের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালকেরা, উপপরিচালকেরা, ট্রেনিং কমপ্লেক্সের অধ্যক্ষসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। খবর-ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেল।