দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে একটি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) চেয়ারম্যান পদে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে অংশ নেওয়া পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে দুই প্রার্থী সর্বোচ্চ সমান ভোট পেয়েছেন। এতে তাৎক্ষণিক কাউকে বিজয়ী ঘোষণা না হলেও, মধ্যরাতে ওই প্রার্থীদের মধ্যে লটারি করে একজনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তবে লটারির সময় তাঁরা কেউই উপস্থিত ছিলেন না।
গতকাল শনিবার উপজেলার রিফায়েতপুর ইউপি চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে এ ঘটনা ঘটে। এতে লটারিতে আবদুল মান্নান বিশ্বাসকে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তবে পরাজিত প্রার্থী ফল প্রত্যাখ্যান করে আজ রোববার সংবাদ সম্মেলন করেন।
নির্বাচনে পাঁচজন প্রার্থীর মধ্যে ফারুক আলম পান্না ও আব্দুল মান্নান বিশ্বাস পেয়েছেন ৬ হাজার ১২৩ ভোট। এ ছাড়া আনারস প্রতীকে জামিরুল ইসলাম বাবু পেয়েছেন ৪ হাজার ৯১৩ ভোট, চশমা প্রতীকে মেহেদী হাসান পেয়েছেন ৬৩৬ ভোট এবং টেবিল ফ্যান প্রতীকে আব্দুল মজিদ পেয়েছেন ১৮ ভোট।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ পাওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, দুই প্রার্থীর অনুপস্থিতিতে রাত ১টা ২০ মিনিটে একটি সাদা বয়ামের ভেতর দুটি ভাঁজ করা চিরকুট রাখা হয়। এক ব্যক্তির চোখ মাফলার দিয়ে বেঁধে ঢাকা হয়। তিনি এক হাত দিয়ে একটি চিরকুট তোলেন। সেই চিরকুটে লেখা নাম ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। তিনি আবদুল মান্নান বিশ্বাসকে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী ঘোষণা করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওবায়দুল্লাহ, জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু আনছার, দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলামসহ অনেকে।
এ বিষয়ে আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমি অসুস্থতার কারণে লটারির সময় উপস্থিত ছিলাম না। তবে আমি লটারিতে বিজয়ী হয়েছি। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমি এই রায় মেনে নিয়েছি।’
তবে সমান ভোট পাওয়া অন্য প্রার্থী ফারুক আলম আজ রোববার সকালে ইউনিয়নটির রিফায়েতপুর বাজারে নিজ রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে করেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই লটারি আমি মানি না। দুই প্রার্থীর উপস্থিতি এবং স্বাক্ষরে লটারি করার বিধান রয়েছে। তাঁদের অনুপস্থিতে কোনো লটারি হতে পারে না। আমি আদালতের দ্বারস্থ হব।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা অরুণ কুমার মণ্ডল জানান, বিধিমোতাবেক দুজন প্রার্থীর মধ্যে লটারি করা হয়েছে। লটারির ফলাফল যে প্রার্থীর পক্ষে গেছে, তাঁকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। লটারি করার সময় উপজেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গেল বছর অক্টোবর মাসের ১৪ তারিখ হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুর রশিদ বাবলু। এরপর ইউনিয়নটিতে চেয়ারম্যান পদ শূন্য ঘোষণা করে উপনির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন অফিস।
এদিকে ইউনিয়নটির ২৫ হাজার ৮৮৬ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৩ হাজার ২১২ জন এবং নারী ভোটার ১২ হাজার ৬৩৪ জন। ভোট দেন ১৭ হাজার ৮১৩ জন।