দীঘলিয়া উপজেলার চাঞ্চল্যকর শিশু তামিম (৭) হত্যার প্রায় ৯ মাস পর আসামি ওবাইদুল্লাহ ওরফে ওবাই শেখকে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দীঘলিয়ার লাখোহাটি গ্রাম থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল বুধবার আদালতে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন ওবাই শেখ।
আটক ওবাইদুল্লাহ ওরফে ওবাই শেখ দীঘলিয়া উপজেলার লাখোহাটি গ্রামের আসলাম শেখের ছেলে। অন্যদিকে শিশু তামিম একই গ্রামের তরিকুল মোল্লার ছেলে।
জবানবন্দি অনুযায়ী জানা যায়, বলাৎকার করতে বাধা দেওয়ায় পানিতে চুবিয়ে তামিমকে হত্যা করা হয়। পরে তামিমের জামা-কাপড় দিয়ে হাত-পা বেঁধে মরদেহ বিলের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়। খুলনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামান এই জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
গ্রেপ্তারকৃত ওবাই শেখের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ২৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে এলাকায় ওবাই ও শিশুরা স্কুল মাঠে ফুটবল খেলছিল। খেলার একপর্যায়ে একজন ঢিল ছুড়লে ওবাই তাকে ধরতে বিলের দিকে দৌড় দেয়। শিশু তামিমও তার পিছু পিছু যায়। সেখানে গিয়ে ওবাই শেখ তামিমকে যৌন নিপীড়নের চেষ্টা চালায়। তামিম চিৎকার করলে ওবাই শেখ বিলের মধ্যে তামিমকে পানিতে চুবিয়ে হত্যা করে। পরে মরদেহের মুখের মধ্যে কলাপাতা ঢুকিয়ে গায়ে থাকা কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে ডোবায় ফেলে দেয়। জিজ্ঞাসাবাদে ওবাই জানিয়েছে, এর আগে তিনটি ছাগলকে বলাৎকার করে সেগুলো পানিতে ডুবিয়ে মেরে ফেলেছিল।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআই খুলনার পুলিশ পরিদর্শক আবদুল্লাহ আল মামুন বিশ্বাস জানান, চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে শিশু তামিম মোল্লা মাদ্রাসায় যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। রাত সাড়ে ৮টায় তামিম ফিরে না আসায় বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি ও মাইকিং করে তামিমের পরিবারের সদস্যরা। পরদিন ২৬ ফেব্রুয়ারি লাখোহাটি গ্রামের গোয়ালাবাদ বিলের ভেতরে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তামিমের মরদেহ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় তামিমের মা জাহানারা বেগম কলি বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। দীঘলিয়া থানার পুলিশ ওই সময় দুজনকে গ্রেপ্তার করলেও মামলার মূল রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারেনি। থানার পুলিশের তদন্তে অগ্রগতি না হওয়ায় বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।