বাগেরহাটে শিবের কৃপা লাভের আশায় হেঁটে ভারতের কেদারনাথ মন্দিরে যাচ্ছেন এক ব্যক্তি। আজ শুক্রবার সকালে রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা এলাকা থেকে ছাতা হাতে নিয়ে হেঁটে রওনা দেন তিনি।
এ সময় আবেগঘন পরিবেশে স্বজন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কোলাকুরি মধ্য দিয়ে বিদায় নেন ২৯ বছর বয়সী স্বদেশ কুন্ডু। সবকিছু ঠিক থাকলে ৭০ দিন হেঁটে ১ হাজার ৯০০ কিলোমিটার দূরের মন্দিরে পৌঁছাবেন এই মহাদেব ভক্ত। স্বদেশ কুন্ডুকে শুভকামনা জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এ সময় তিনি টিশার্ট ও লুঙ্গি পরিহিত ছিলেন।
স্বদেশ কুন্ডু গৌরম্ভা এলাকার মোহন কুন্ডুর ছেলে। গৌরম্ভা বাজারে তাঁর কাপড়ের ব্যবসা রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, স্বদেশ কুন্ডু একজন ধর্মভীরু মানুষ। বিভিন্ন সময় তিনি দূরদূরান্তের জাগ্রত মন্দিরে যাওয়ার আশা প্রকাশ করতেন। এবার তিনি হেঁটে কেদারনাথ মন্দিরে যাচ্ছেন। তার জন্য আশির্বাদ করেন, তিনি যেন সুস্থভাবে ফিরে আসেন।
স্বদেশ কুন্ডুর ভাগনে সবুজ সরকার বলেন, ‘হেঁটে যাওয়া খুবই কষ্টকর একটা বিষয়। তারপরও মহাদেবের ভালোবাসা পেতে মামা যাচ্ছেন, মামার জন্য শুভ কমানা জানাই।’
দীলিপ কুন্ডু নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘মনে আশা থাকলেও, সবার পায়ে হেঁটে যাওয়ার সাহস হয় না। স্বদেশের এই যাত্রা তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। স্বদেশ সুস্থভাবে ফিরে আসলে, হয়ত আরও অনেকে এভাবে হেঁটে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। তাতে কেদারনাথ মন্দিরের স্থায়ী ভক্তদের সঙ্গে আমাদের বাগেরহাটের সনাতন ধর্মালম্বীদের একটি সেতুবন্ধন তৈরি হবে।’
কেন এই দীর্ঘ যাত্রা জানতে চাইলে স্বদেশ কুন্ডু বলেন, ‘কেদারনাথ মন্দির একটি জাগ্রত মন্দির। ছোটবেলা থেকেই এই মন্দিরে যাওয়ার একটি সুপ্ত বাসনা ছিল, মনের সেই আশা পূরণের জন্য হেঁটে যাচ্ছি। সেখানে শিবের পূজা ও আড়াধনা করব। আমার পরিবার ও এলাকাবাসীর জন্য প্রার্থনা করব।’
কেদারনাথ মন্দিরে পূজা আর্চোনা ও অন্যান্য আড়াধনা শেষে যানবাহনে করে বাড়ি ফিরবেন ২৯ বছর বয়সী এই যুবক। দীর্ঘ যাত্রায় মাত্র ৩০ হাজার টাকা ব্যয় হবে বলে জানান স্বদেশ।
কেদারনাথ মন্দিরটি ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের গাড়োয়াল হিমালয় পর্বতশ্রেণীতে অবস্থিত কেদারনাথ শহরের মন্দাকিনী নদীর তীরে স্থাপিত একটি শিব মন্দির। এটি সনাতন ধর্মালম্বীদের অন্যতম প্রধান তীর্থস্থান। প্রতিবছর নির্দিষ্ট সময়ে অসংখ্য ভক্ত ও দর্শনার্থীরা আসেন কেদারনাথ মন্দিরে।