খুলনার দাকোপের উত্তর কামিনিবাসিয়া এলাকায় ভয়াবহ নদীভাঙনে ওয়াপদা বেড়িবাঁধ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। জোয়ারের পানির তোড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ওয়াপদা রাস্তাটি যেকোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে। এরই মধ্যে ওয়াপদা রাস্তার তিন ভাগের দুই ভাগ ঢাকি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বাকি অংশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে মানুষ। ভাঙনকবলিত স্থান দ্রুত মেরামত না করা হলে ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়ে আমনসহ আরও অনেক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
সরেজমিন তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের উত্তর কামিনিবাসিয়া এলাকার রায়বাড়িসংলগ্ন নদীভাঙনকবলিত স্থানে গিয়ে দেখা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩১ নম্বর পোল্ডারের কাছে বটবুনিয়া থেকে কামিনিবাসিয়া, ঝালবুনিয়ায় যাওয়ার রাস্তাটি ঢাকি নদীগর্ভে বিলীন হতে চলেছে। ওয়াপদা রাস্তার প্রায় ১০০ ফুট এলাকা নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাস্তার প্রায় ৯৫ ভাগ নদীগর্ভে চলে গেছে। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা ভয়ে ভয়ে দিন কাটাচ্ছেন। যেকোনো মুহূর্তে ওয়াপদা বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। অতি দ্রুত নদীভাঙনকবলিত স্থান মেরামতসহ টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান তাঁরা।
কামিনিবাসিয়া এলাকার মনোজিত রায় বলেন, ‘ওয়াপদা রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। তিন ভাগের দুই ভাগ নদীতে ভেঙে গেছে। এখন নদীতে পানি বাড়ছে। যদি নদীতে বড় ধরনের জোয়ার হয়, তাহলে যেকোনো সময় ওয়াপদা ভেঙে এলাকা প্লাবিত হবে। এতে সাধারণ মানুষসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে। শুধু তাই নয়, ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়বে। তাই অতিদ্রুত নদীভাঙন এলাকা মেরামতসহ টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।’
নদীভাঙন এলাকার পাশে বসবাসকারী উত্তর কামিনিবাসিয়া এলাকার সবিতা রায় বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। আমাদের নিয়ে কারও কোনো মাথাব্যথা নেই। আমরা বাচলেই কি আর মরলেই কি। জোয়ারের সময় রাস্তায় এসে ভাঙনের অবস্থা দেখলে ভয়ে রাতে ঘুম আসে না।’
তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, ওয়াপদা রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। তিন ভাগের দুই ভাগ নদীতে ভেঙে গেছে। যদি নদীতে বড় ধরনের জোয়ার হয়, তাহলে যেকোনো সময় ওয়াপদা ভেঙে এলাকা প্লাবিত হবে। এতে সাধারণ মানুষসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে। এ ছাড়া ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়বে।
তিলডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন গাজী বলেন, ‘বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের পেছন থেকে দ্রুত বিকল্প বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে।’
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, ‘আমরা দ্রুত ভাঙন রোধের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। পাইলিং করে জিও ব্যাগ ফেলে প্রাথমিকভাবে নদীভাঙন আটকানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের পেছন দিক দিয়ে বিকল্প বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে। সেখানে জিও ব্যাগ ও ডাম্পিং করে ভাঙন প্রতিরোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।’