অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি–প্রক্টরের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ হলেও এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থীরা। সেখানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেনের পদত্যাগ ঠেকাতে বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
আজ রোববার উপাচার্য পদত্যাগ করছেন—এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে শত শত শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে সমবেত হয়ে উপাচার্য যাতে পদত্যাগ না করেন এ জন্য বিক্ষোভ করেন।
একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কক্ষে প্রবেশ করে উপাচার্যের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, আপনি আজ পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন। আমরা আপনার পদত্যাগ চাই না। আমরা কোনোভাবেই আপনার পদত্যাগ মেনে নেব না।’ এ সময় পদত্যাগ না করতে উপাচার্যকে অনুরোধ করেন তাঁরা।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ‘যেকোনো কিছুর বিনিময়ে আমরা উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাই। উপাচার্য স্যারের পাশে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা সব সময় আছি।’
পরে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের অফিস থেকে বের হয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। শিক্ষার্থীরা ‘ভিসি স্যারের পদত্যাগ, চাই না–চাই না, ‘ভিসি স্যারের জন্য খুবি ধন্য’—এমন সব স্লোগান দিতে থাকেন। দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষার্থীরা প্রশাসন ভবনে অবস্থান করে পদত্যাগ না করার জন্য স্লোগান দিতে থাকলে উপাচার্য প্রশাসন ভবনের নিচে নেমে আসেন।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুবির অন্যতম সমন্বয়ক জহুরুল তানভীর বলেন, ‘আমাদের একটাই দাবি, উপাচার্য স্যারের পদত্যাগ কোনো অবস্থাতেই মেনে নেব না। উপাচার্য স্যার বিশ্ববিদ্যালয়কে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য যেভাবে কাজ করছেন, সেভাবে কাজ চালিয়ে যাবেন। তাতে যদি কোনো বাধা আসে, আমরা তা ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করব।’
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শুধু একা নন, এখানে একটি টিম কাজ করে। সে সঙ্গে আছেন উপ-উপাচার্য, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার, বিভিন্ন বডির সদস্য, শিক্ষকবৃন্দ ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে সবাই কাজ করেন। তোমরা যে বিষয় নিয়ে আসছ, তা আমি ভেবে দেখব এবং এ বিষয়ে আমি আমার টিমের সঙ্গে কথা বলে তারপর তোমাদের সঙ্গে আবার কথা বলব।’
পরে উপাচার্য তাঁর দপ্তরে ফিরে যান এবং সেখানে উপস্থিত উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক খান গোলাম কুদ্দুসসহ শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন।