যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজ শাখা ছাত্রদলের এক কর্মীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের কর্মীদের বিরুদ্ধে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার ছাত্রদল কর্মীর নাম কানোয়ার হোসেন (২৪)। তিনি কলেজের অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। বর্তমানে তিনি যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহত ছাত্রদল কর্মী কানোয়ার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজ বৃহস্পতিবার রাতে কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের পিকনিক যাওয়ার কথা রয়েছে। আমি ও বন্ধুরা সেই পিকনিকের টিশার্ট আনতে কলেজের ডিপার্টমেন্টে যায়। ক্যাম্পাসে পৌঁছালে ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের কর্মী রবিউল ইসলাম ও এনামুল ইসলাম আমারে ডাকে। এরপর ক্যাম্পাস ছাত্রদলের সভাপতির সঙ্গে থাকা আমার একটি ছবি দেখিয়ে ওরা বলেন, ‘‘তুই ছাত্রদল করিস।’’ এই বলে কলেজের ছাত্র কমনরুমে নিয়ে দরজা বন্ধ করে ৮-১০ জন আমাকে বেধড়ক মারধর শুরু করে।’
কানোয়ার আরও বলেন, ‘একপর্যায়ে কমনরুমের বাথরুমে নিয়ে যেয়ে ৭–৮ জন মিলে স্ট্যাম্প দিয়ে সারা শরীরে মারধর করা শুরু করে। এরপর কলেজের স্যারে আসলে দক্ষিণ গেটে নিয়ে যেয়ে সেখানেও দ্বিতীয় দফায় মারধর করে বলে, ‘‘আর যদি তুই ছাত্রদলের প্রোগ্রামে যাস, তোরে মেরে ফেলব। গুলি করে মারব।’ ’
প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত শিক্ষার্থীর এক বন্ধু নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘কানোয়ারের ওপর বেধড়ক মারপিট দেখে আমরা কয়েকজন বন্ধু ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাত–পা জড়িয়ে ধরলাম। তাদের বললাম ওরে মাফ করে দেন। তারপরও তারা মার থামাননি। কয়েকটা স্ট্যাম্প ভেঙে ফেলেছে মারতে মারতে। এরপর আবার এক গলিতে নিয়ে আবার দ্বিতীয় দফাতে কাঠ দিয়ে মারধর করেছে।’
আহত ছাত্রদল কর্মীর খালা সালমা খাতুন বলেন, ‘গ্রাম থেকে শহরে পড়াশোনা করতে পাঠিয়েছি ছেলের ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য। কানোয়ার সক্রিয় রাজনীতি করে না। ক্যাম্পাসে যদি ছাত্ররা নিরাপত্তা না থাকে; তাহলে কি হবে। এভাবে মানুষ মানুষকে পেটাতে পারে? এই ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচারের দাবি জানাচ্ছি।’
যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বিচিত্রা মল্লিক বলেন, ‘আহত ব্যক্তির শরীরে এলোপাতাড়ি মারপিটের চিহ্ন রয়েছে। মাথায় কাটা দাগ রয়েছে। সারা শরীরে কালশিটে পড়ে গেছে। ওই শিক্ষার্থী এখন শঙ্কামুক্ত।’
ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াস বলেন, ‘এম এম কলেজে বর্তমানে ছাত্রলীগের কমিটি নাই। ছাত্রদলের কোনো কর্মীকে কোনো ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মারধর করেনি। তার অভিযোগ মিথ্যা।’
যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয়ের অধ্যাপক অধ্যক্ষ মর্জিনা আক্তার বলেন, ‘মারামারির কোনো ঘটনা ঘটেনি। কমনরুমে শিক্ষার্থীদের জটলার খবর শুনে কয়েকজন স্যারকে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু স্যারেরা তেমন কোনো ঘটনা দেখতে পারেননি। তারপরও যদি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’